কাঁঠগড়ায় কেঁদে কেঁদে কথা বললেন সাবরিনা
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনূর রহমানের আদালতে শুনানিকালে এসব কথা বলেন ডা. সাবরীনা আরিফ।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ বেলা ১১টার দিকে ডা. সাবরীনাকে প্রথমে পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতের গারদখানায় রাখা হয়। তখন গণমাধ্যমকর্মী ও আইনজীবীদের ভিড় ছিল চেখে পড়ার মতো। তবে ভার্চুয়াল আদালতের গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় আদালত কক্ষে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এরপর দুপুর পৌঁনে ১২টার দিকে সাবরীনাকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের ষষ্ঠ তলায় ওঠানো হয়। তখন কড়া নিরাপত্তায় দুজন নারী পুলিশ তাঁকে ধরে ছিলেন। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনূর রহমানের আদালতের কাঁঠগড়ায় তাঁকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
আদালতে তোলার পরে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মামলার নম্বর ধরে ডাকলে কাঁঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা ডা. সাবরীনাকে তখন বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
শুনানিকালে সরকারি কৌঁসুলি আজাদ রহমান আদালতকে বলেন, ‘জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরীনা আরিফ একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছেন। করোনাভাইরাসের মতো ভয়ঙ্কর রোগ নিয়ে প্রতারণা করে মানুষকে বিপদে ফেলছেন। তাঁর প্রতারণার ফাঁদে পড়ে মানুষ অসহায়। এ ছাড়া সরকারি ডাক্তার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরও তিনি অন্যান্য ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো তথ্য বের হয়ে আসবে।’
এ সময় আদালতে ডা. সাবরীনার পক্ষে নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী লিখিতভাবে জামিন ও রিমান্ড বাতিলের আবেদনও করেননি।
তখন ডা. সাবরীনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আদালতকে বলেন, ‘জেকেজির চেয়ারম্যান আমাকে বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি জেকেজির চেয়ারম্যান না। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নির্দোষ।’ একপর্যায়ে তিনি আদালতে কেঁদে ফেলেন।
উভয়পক্ষের বক্তব্যের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিনূর রহমানের আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে পুলিশি নিরাপত্তায় ডা. সাবরীনা আরিফকে গাড়িতে তুলে আদালতপাড়া ত্যাগ করে পুলিশ।
এর আগে ডা. সাবরীনার স্বামী জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফ চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
গতকাল রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনার নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে ডা. সাবরীনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে জেকেজি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করোনা রিপোর্ট নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। আমরা অভিযানে নেমে ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করি। ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ডা. সাবরীনা আরিফ। তাঁকে আদালতে প্রেরণ করা হবে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে।’
গত ২৩ জুন তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাসানাত খন্দকার এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘করোনা পরীক্ষার কথা বলে ভুক্তভোগী রোগীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফ চৌধুরীসহ মোট ছয়জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। জেকেজি প্রজেক্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করত। এই নমুনা সংগ্রহের পর তা আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করত না। পরীক্ষা না করেই নিজেদের কম্পিউটার দিয়ে করোনার রিপোর্ট বানাত। এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছিল। পরে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করি। তারা করোনা রোগীদের সঙ্গে দুই মাস ধরে এই প্রতারণা করেছে।’
পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আরিফ চৌধুরীর দাবি, তেজগাঁও কলেজে তাদের একটি করোনার বুথ রয়েছে। ওই বুথ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদিত। সেখানে তারা নমুনা সংগ্রহ করে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, এটার আদলে তারা জোবেদা খাতুন স্বাস্থ্যসেবা প্রজেক্টের নামে একটি পেজ খুলেছিল ফেসবুকে। সেখানে ফোন নম্বরও দেওয়া ছিল। ওই পেজ থেকে যেসব কল আসত, তাদের বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করত। যাদের নমুনা সংগ্রহ করত, তাদের মধ্যে বাংলাদেশিদের কাছ থেকে প্রতি রিপোর্টের জন্য পাঁচ হাজার টাকা নিত। আর বিদেশিদের কাছ থেকে নিত ১০০ ডলার। অথচ কারো নমুনা পরীক্ষা না করেই তারা ইচ্ছেমতো নেগেটিভ-পজিটিভ বসিয়ে রিপোর্ট দিত।’
হাসানাত খন্দকার আরো বলেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারের সময় তিন হাজার করোনা কিট, ৪০টি ভুয়া করোনার সনদ এবং তাদের কাছে থাকা চারটি ল্যাপটপ ও দুটি কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই দিন মামলা করে।
গত ২৪ জুন জেকেজির গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সিইও ও ডা. সাবরীনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকেই সরকারি চিকিৎসক হয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পদে থাকা সাবরীনার নাম এবং জালিয়াতির তথ্য নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। এ সময় একটি ল্যাপটপে ১৫ হাজার ভুয়া রিপোর্ট তৈরির আলামত পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়।
জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যা জব্দ করা ল্যাপটপে পাওয়া গেছে।
শুধু জেকেজি-ই নয়, দ্বিতীয় স্বামীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওভাল গ্রুপেরও চেয়ারম্যান ছিলেন ডা. সাবরীনা। আরিফ গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে ওভাল গ্রুপের ওয়েবসাইট ডাউন পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ওভাল গ্রুপের ঢাকা এক্সপো-২০১৯ নামের একটি ওয়েবসাইটে ডা. সাবরীনা চৌধুরীকে ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয় দেওয়া হয়েছে। সেখানে ১১ বার চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর নাম লেখা হয়েছে। ওভাল গ্রুপের প্রোফাইলেও চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছে সাবরীনার নাম।
- আইপিএল নিলামে ঝড় তুলে বিশাল পারিশ্রমিকে দল পেলেন নাহিদ রানা
- আইপিএল নিলামে দল পেল মুস্তাফিজের দুই সতীর্থ, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- 2025 IPL নিলাম: অবিশ্বাস্যভাবে এইমাত্র শেষ হলো মুস্তাফিজের নিলাম, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- ব্রেকিং নিউজ: ১০ কোটি রুপিতে দল পেলেন নাহিদ রানা, দেখেনিন সাকিব ও মুস্তাফিজের অবস্থান
- IPL 2025 নিলাম : এইমাত্র শেষ হলো সাকিবের নিলাম
- IPL 2025 নিলামে নতুন চমক: আকাশ ছোয়া মুল্যে দল পেলেন মুস্তাফিজের দুই সতীর্থ, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত চার দলের, বাদ পড়তে পারে ব্রাজিল, দেখেনিন আর্জেন্টিনার অবস্থান
- চলছে IPL নিলাম : আকাশ ছোয়া মূল্যে দল পেলেন মুস্তাফিজের সতীর্থ, দেখেনিন নাহিদ রানার অবস্থান
- চলছে IPL নিলাম, দেখেনিন সাকিব মুস্তাফিজের অবস্থান ও এখন পর্যন্ত দল পেলেন যারা
- ব্রেকিং নিউজ :শেষ হলো সাকিব, রিশাদ ও মুস্তাফিজের নিলাম, দেখেনিন লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়ের অবস্থান
- ২০২৫ IPL নিলামে চমক দেখিয়ে রেকর্ড দামে দল পেলেন সাকিব
- IPL নিলাম ২০২৫: মুস্তাফিজ বাদ ধোনির চাওয়াতেই রেকর্ড মুল্যে আইপিএলে দল পেলেন সাকিব
- ব্রেকিং নিউজ : IPL নিলাম: সাকিব মুস্তাফিজ নয় ইতিহাস গড়ে রেকর্ড বিডে যে দলে রিশাদ হোসেন
- 2025 IPL নিলাম: আকাশ ছোয়া মূল্যে দল পেলেন লিটনের সতীর্থ, দেখেনিন সাকিব মুস্তাফিজের অবস্থান
- আইপিএল নিলামে ইতিহাস গড়ে ৪কোটি রুপিতে যে দলে মুস্তাফিজ