ডিউটি শেষ করে অসহায়দের জন্য খাবার নিয়ে যান ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’পুলিশ সফি
এ পরিস্থিতিতে মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে দিন-রাত সিলেটের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের সদস্য সফি আহমদ। সাধ্যমতো সহায়তা তুলে দিচ্ছেন দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারের হাতে। অনেকটা নীরবে-নিভৃতে তিনি এ তৎপরতা চালালেও ইতোমধ্যে তিনি ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন অসহায় মানুষের কাছে।
মো. সফি আহমেদ সিলেট মহানগর পুলিশের নায়েক পদে কর্মরত। বর্তমানে তিনি মহানগর পুলিশের মিডিয়া ও কমিউনিটি সার্ভিস বিভাগে কর্মরত আছেন। তার বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশ সদস্য মো. ইদ্রিস আলী।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং সাধারণ ছুটি ঘোষণার কয়েকদিন পর থেকে মূলত কাজ শুরু করেন সফি আহমেদ। প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন শেষে নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের খোঁজে। গরিব ও অসহায় মানুষের ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন মো. সফি আহমেদ। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে প্রতিদিন মোটরসাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন তিনি।
সফি আহমদের পথচলা শুরু গল্পটাও অন্যরকম। প্রথমে নিজের দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতা করার আগ্রহ থেকেই তিনি পথে নামেন। কিন্তু যখন দেখেন সংকট সর্বত্র তখন তিনি আর নিজের মধ্যে তৎপরতা সীমাবদ্ধ রাখতে পারেননি। যেখানেই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষ দেখেছেন সেখানেই বাড়িয়ে দিয়েছেন সহযোগিতার হাত। তার এ তৎপরতা সহজেই সকলের নজর কাড়ে।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রশংসায় ভাসতে থাকেন সফি আহমদ। অনেকেই তাকে ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অফিসের ডিউটি করেন। তারপর মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন খাদ্যসামগ্রী বিতরণে।
তিনি জানান, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে এসবিসি নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ৫০টা পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন তিনি। এরপর থেকে আজ অবধি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন সিলেটের বিভিন্ন পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। নিজের অফিসের দায়িত্ব পালন শেষ করে মোটরসাইকেলে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে চলেন গরিব অসহায়দের ঘরে। তবে তার এ উদ্যোগে শুধু গরিব অসহায়রা সাহায্য পাচ্ছেন তা নয়। অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সাহায্য নিচ্ছেন।
এ উদ্যোগ শুরু সম্পর্কে সফি আহমেদ বলেন, প্রথমদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ হতে চাই-শিরোনামে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে একটা পোস্ট করি। তখন অবশ্য টাকার বিনিময়ে খাদ্য পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। যাতে মানুষজন বাসায় থাকেন। তবে যতগুলো ফোন আসে সবাই ফোন দিয়ে জানায় তাদের কাছে খাবারের কিছু নেই হাতে টাকাও নেই। তখন থেকে বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে আসছি।
সফি আহমদ জানান, তার বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে তিনি বেঁচে নেই। বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা, পেনশনের টাকা, পরিবারের সদস্য, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহকর্মী ও বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে পাওয়া সাহায্য থেকেই তিনি এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কার্যক্রম চালাতে গিয়ে তাকে কিছুটা ঋণগ্রস্তও হতে হয়েছে। এছাড়া সিলেট মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সবাই আর্থিক সহযোগিতাসহ সবধরনের সহযোগিতা করছেন বলেও তিনি জানান।
সফি আহমেদ আরও জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনি অফিসের ডিউটি করেন। তারপর মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।
তিনি বলেন, আমার পরিবার প্রথম থেকেই আমাকে সাহায্য করে আসছে। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন উনার ভাতা, পেনশনের সব টাকা এ উদ্যোগে দেন আমার মা। তার সঙ্গে আমার ভাই পুলিশের এএসআই সোহেল অর্থ থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন। এছাড়া আমার বন্ধুরাও আমাকে অনেক সাহায্য করছে। তাদের কাছে আমি সারাজীবন ঋণী থাকব।
প্রতিদিন প্রায় ১৫- ২০টা পরিবারের কাছে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন তিনি। এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ২৮টি পরিবারের কাছে এসব বিতরণ করেছেন। ২৩ মে পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৪২৫টি পরিবারের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন ও বিকাশে মাধ্যমে ১০০ পরিবারের কাছে টাকা পাঠিয়েছেন তিনি।
খাদ্যসামগ্রী মধ্যে আছে চাল, ডাল , তেল, সেমাই, নারিকেল, লবণ, ময়দা, খেজুর, আলু, পেঁয়াজ, ছোলা, সাবান ও বাচ্চাদের জন্য চিপস। এছাড়া কারও চাহিদা অনুযায়ী কোনো কোনো প্যাকেটে দুধ ও মসলাও দেয়া হয়।
তিনি জানান, শুধু সিলেটে না, নিজের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায়ও দুই বন্ধুর সাহায্যে ৪০০ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তিনি এবং আসন্ন ঈদ উপহার ও দেয়া হয়েছে। রমজান মাসে সিলেটে খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি ইফতারও বিতরণ করছেন তিনি। আসন্ন ঈদের বোনাস ও প্রবাসীদের সহযোগিতা ঈদ সামগ্রীও বিতরণ শুরু করছেন তিনি।
এ কার্যক্রম চালাতে গিয়ে অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন পুলিশের এ নায়েক। এরকম একটি ঘটনা জানান সফি আহমেদ। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে রাতে নগরের উপশহর থেকে সাহায্য চেয়ে আমার কাছে একটি ফোন আসে। আমি যখন ঠিকানা অনুযায়ী সেখানে পৌঁছাই গিয়ে দেখি একটা বহুতল ভবন। সেই ভবনের সিকিউরিটি আমাকে প্রথমে প্রবেশ করতে দেয়নি। কারণ তার মতে এ বাসায় সাহায্য নেয়ার মতো কেউ থাকার কথা নয়। তাকে অনেক বুঝালেও আমাকে ভবনের ভেতর ঢুকতে দেবে না। পরে ওই ব্যক্তিকে ফোন দিলে পরবর্তীতে ওই পরিবারের একজন নিচে নেমে সাহায্য নিয়ে যান। এরকম অনেক পরিবারের হাতেও আমি খাদ্যসামগ্রী দিয়েছি।
- আইপিএল নিলামে ঝড় তুলে বিশাল পারিশ্রমিকে দল পেলেন নাহিদ রানা
- আইপিএল নিলামে দল পেল মুস্তাফিজের দুই সতীর্থ, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- 2025 IPL নিলাম: অবিশ্বাস্যভাবে এইমাত্র শেষ হলো মুস্তাফিজের নিলাম, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- ব্রেকিং নিউজ: ১০ কোটি রুপিতে দল পেলেন নাহিদ রানা, দেখেনিন সাকিব ও মুস্তাফিজের অবস্থান
- IPL 2025 নিলাম : এইমাত্র শেষ হলো সাকিবের নিলাম
- IPL 2025 নিলামে নতুন চমক: আকাশ ছোয়া মুল্যে দল পেলেন মুস্তাফিজের দুই সতীর্থ, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত চার দলের, বাদ পড়তে পারে ব্রাজিল, দেখেনিন আর্জেন্টিনার অবস্থান
- চলছে IPL নিলাম : আকাশ ছোয়া মূল্যে দল পেলেন মুস্তাফিজের সতীর্থ, দেখেনিন নাহিদ রানার অবস্থান
- চলছে IPL নিলাম, দেখেনিন সাকিব মুস্তাফিজের অবস্থান ও এখন পর্যন্ত দল পেলেন যারা
- ব্রেকিং নিউজ :শেষ হলো সাকিব, রিশাদ ও মুস্তাফিজের নিলাম, দেখেনিন লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়ের অবস্থান
- ২০২৫ IPL নিলামে চমক দেখিয়ে রেকর্ড দামে দল পেলেন সাকিব
- IPL নিলাম ২০২৫: মুস্তাফিজ বাদ ধোনির চাওয়াতেই রেকর্ড মুল্যে আইপিএলে দল পেলেন সাকিব
- ব্রেকিং নিউজ : IPL নিলাম: সাকিব মুস্তাফিজ নয় ইতিহাস গড়ে রেকর্ড বিডে যে দলে রিশাদ হোসেন
- 2025 IPL নিলাম: আকাশ ছোয়া মূল্যে দল পেলেন লিটনের সতীর্থ, দেখেনিন সাকিব মুস্তাফিজের অবস্থান
- আইপিএল নিলামে ইতিহাস গড়ে ৪কোটি রুপিতে যে দলে মুস্তাফিজ