| ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দেশের এই জেলায় ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে সাড়ে ৪শত কোটির সম্পদের ক্ষতির আশংকা

জাতীয় ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২০ মে ২১ ১৭:২১:৫৪
দেশের এই জেলায় ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে সাড়ে ৪শত কোটির সম্পদের ক্ষতির আশংকা

প্রচণ্ড ঝড়ে খুলনার উপকূলীয় চারটিসহ নয় উপজেলার হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। ভারী বর্ষণ ও তীব্র জোয়ারের পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি ও ছোট-বড়ো অসংখ্য সাদা মাছ ও চিংড়ি ঘের।

বুধবার সন্ধ্যায় প্রবল গতিতে সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানে সুপার সাইক্লোন আমফান। সারা রাত ধরে চলে এর তাণ্ডব। ঝড়ে সুন্দরবন উপকূল সংলগ্ন খুলনা জেলার কয়রা ও দাকোপ বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খুলনা মহানগরীসহ এসব এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তীব্র ঝড়ের মধ্যে লাখ লাখ মানুষের সারা রাত কাটে কাটে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়।

জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে, সুপার সাইক্লোন আমফানে খুলনার নয় উপজেলায় ৮২ হাজার ৫৬০টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ। এছাড়া গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা। এছাড়া ২১ হাজার ২৮৮টি চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের ভেসে গিয়ে ১৯৮ কোটি ১১ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪৪৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। তবে, সুন্দরবনে বড়ো কোনো ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছে বনবিভাগ।

কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ও স্থানীয়রা জানান, জোয়ারের পানির তোড়ে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ছোটো আংটিহারা বাকেরগাজীর বাড়ির পাশে শাকবাড়িয়া নদীর প্রায় ১২০ গজ বেড়িবাঁধ, আংটিহারা মজিদ গাজীর পাশে ৩০০গজ বেড়িবাঁধ, জোড়সিং বাজারের পাশে ৫০০গজ বেড়িবাঁধ, কপোতাক্ষ নদের চোরামোখা খেয়াঘাটের কাছে ৫০০গজ বেড়িবাঁধ ও গোলখালী তসলিম মোল্লার বাড়ির পাশে ৫০০ গজ বেড়িবাঁধ, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাজীপাড়া গ্রামের মাথায় কপোতাক্ষ নদের ৬০০গজ বেড়িবাঁধ, কাটকাটা বাজারের শাকবাড়ীয়া নদীর ৩০০গজ বেড়িবাঁধ, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া গ্রামে কপোতাক্ষ নদের

৭০০গজ বেড়িবাঁধ এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা ও গোবরা ঘাটাখালি গ্রামে কপোতাক্ষ নদের আধা কিলোমিটার এলাকাসহ ১০টি জায়গার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এবং মহেশ্বরীপুর ইউনয়নের কয়রা নদীর পানি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ উপচে লবণ পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এছাড়া ঝড়ে কয়রা উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের ছোটবড়ো ৫ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে।

এছাড়া পাইকগাছা উপজেলার লতা, দেলুটি, লস্কর, গোড়ইখালী সোলাদানা ও রাড়ুলি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা বাড়িঘর লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য সাদা মাছ ও চিংড়ি ঘের। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে গাছপালা, কাঁচা, আধাপাকা ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল কুমার সাহা বলেন, কয়রা উপজেলায় প্রায় ১৩-১৪টি জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করা চেষ্টা করা হচ্ছে।

খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ঝড়ে কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পাইকগাছা উপজেলার এছাড়া পাইকগাছা উপজেলার লতা, দেলুটি, লস্কর, গোড়ইখালী সোলাদানা ও রাড়ুলি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা বাড়িঘর লবণ পানিতে প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে অসংখ্য সাদা মাছ ও চিংড়ি ঘের। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে গাছপালা, কাঁচা, আধাপাকা ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে দাকোপ উপজেলার অনেক জায়গায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে। বহু কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। হাট-বাজারের দোকান ঘরের টিন উড়ে গেছে। খুলনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ শ্রী পঞ্চানন বিশ্বাস বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে দাকোপ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বটিয়াঘাটা উপজেলা সদরসহ অনেক হাট-বাজারের দোকান ঘরের টিন উড়ে গেছে।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দার জানান, খুলনা জেলার ৯ উপজেলার ৮২ হাজার ৫৬০টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ। এছাড়া গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. মঈনুদ্দিন খান বলেন, বনরক্ষী ও কর্মকর্তারা ঝড়ের সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছিলেন। ফলে তারা সবাই অক্ষত আছেন এবং এখন গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করবেন। তবে প্রাথমিকভাবে ক্ষতি খুব বেশি হয়নি বলে ধারণা করছি। তবে জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা বেশি ছিলো। এতে সুন্দরবনের ভেতরে থাকা মিষ্টি পানির পুকুরগুলোতে লবণ পানি ঢুকেছে। এটাতেই বেশ ক্ষতি হয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল জানান, খুলনা জেলায় ১৮ হাজার ৯০টি চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। এছাড়া ৩ হাজার ১৯৮টি সাদা মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে খুলনা জেলায় চিংড়ি ও মৎস্যখাতে ক্ষতি হয়েছে ১৯৮ কোটি ১১ লাখ টাকা।

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে দাকোপের বটবুনিয়াসহ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি জায়গায় সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে আগামীকাল নতুন সময়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে আগামীকাল নতুন সময়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মিশ্র পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এবার ওয়ানডে ফরম্যাটে মাঠে নামার অপেক্ষায়। ...

আজ ২৭/১১/২০২৪ বাংলাদেশের ম্যাচসহ টিভিতে আজকের খেলার সময় সূচি

আজ ২৭/১১/২০২৪ বাংলাদেশের ম্যাচসহ টিভিতে আজকের খেলার সময় সূচি

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এ ছাড়াও বুধবার (২৭ নভেম্বর) টিভিতে ...

ফুটবল

পয়েন্ট টেবিল প্রকাশ : ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে আরও যত পয়েন্ট দরকার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার

পয়েন্ট টেবিল প্রকাশ : ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে আরও যত পয়েন্ট দরকার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার

২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক ফুটবল সূচির প্রায় শেষ প্রান্তে এসে নিজেদের বছরের শেষ ম্যাচ খেলেছে দক্ষিণ ...

এইমাত্র পাওয়া : ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

এইমাত্র পাওয়া : ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

কয়েক দিন আগেই পেরুর লিমাতে পর্দা উঠেছিল দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের অনূর্ধ্ব-২০ ফুটসাল টুর্নামেন্ট। যেখানে দ্বিতীয় ...



রে