| ঢাকা, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০ মাঘ ১৪৩১

অনিশ্চয়তায় পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর পড়ালেখা

২০২০ এপ্রিল ০৯ ১৩:৪৮:৫৮
অনিশ্চয়তায় পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর পড়ালেখা

জানা যায়, এর আগেও হরতাল-অবরোধসহ নানা কারণে দিনের পর দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থেকেছে। তখন অবশ্য শিক্ষার্থীরা নিয়মিত প্রাইভেট-কোচিং পড়ত। কিন্তু এখন ঘর থেকেই বের হওয়ার উপায় নেই। সবার সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ। ফলে বাসায় অনেক সময় পেলেও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা এগোচ্ছে না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে প্রথম বিবেচ্য বিষয়। তবে স্কুল বন্ধ থাকার এই সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে আমরা টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার করছি। সবার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গত ২৯ মার্চ থেকে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পাঠদান সংসদ টেলিভিশনে সম্প্রচার করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। আর গত ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকের ক্লাসও সম্প্রচার করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু দুর্বল পাঠদান আকর্ষণ করতে পারছে না শিক্ষার্থীদের। ২০ মিনিটের এই পাঠদানে শিক্ষকের একপক্ষীয় আলোচনায় আগ্রহ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।

ঢাকার কয়েকজন অভিভাবক জানান, টিভিতে এমন একটি অধ্যায় পড়ানো হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে এর আগের কয়েকটি অধ্যায় এখনো পড়া হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা ধরতে পারছে না। অনেক সময় বোর্ডের লেখা বোঝাও যায় না। উপস্থাপনা অনেক দুর্বল। অর্থাৎ টিভিতে প্রচারিত ক্লাসে গতি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার পরও কিছুটা হলেও উপকারে আসছে ক্লাসগুলো।

জানা যায়, এবার ১ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এই পরীক্ষাসূচি স্থগিত করতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমনকি নতুন তারিখও ঘোষণা করা যাচ্ছে না। ফলে অনিশ্চয়তায় দিন পার করছে প্রায় ১২ লাখ পরীক্ষার্থী।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এসএসসির তত্ত্বীয় এবং ৫ মার্চ ব্যাবহারিক পরীক্ষা শেষ হয়। সেই হিসেবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার কথা; কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে মাঝপথে এসে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নোত্তরের অপটিক্যাল মার্ক রিডার (ওএমআর) শিট দেখা স্থগিত করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এ ছাড়া রচনামূলক খাতা দেখায়ও সমন্বয় করতে পারছে না। ফলে যথাসময়ে ফল প্রকাশ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা আছে যথাসময়ে এসএসসির ফল প্রকাশের। তবে বেশি দিন অফিস বন্ধ থাকলে তা কষ্টকর হয়ে পড়বে। আর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অন্তত ১৫ দিন পর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে পারে।’

জানা যায়, মার্চ মাসের শেষ দিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর সিটি পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এপ্রিলের শুরুতেই প্রথম সাময়িক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সিটি এবং প্রথম সাময়িক পরীক্ষা অলিখিতভাবে স্থগিত করতে হয়েছে। আর কবে স্কুল খুলবে তা বলতে পারছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষও। ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সোয়া চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চতার মধ্যে পড়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টেলিভিশনে ক্লাস প্রচারের পাশাপাশি আমরা নিজ নিজ স্কুলের শিক্ষকদের বলেছি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। এখন যেহেতু স্কুলই বন্ধ রয়েছে তাই প্রথম সাময়িক পরীক্ষার কথা আমরা চিন্তাও করতে পারছি না। স্কুল খোলার পর শিক্ষার্থীদের পড়াতে হবে, এরপর পরীক্ষার কথা ভাবা হবে।’

রাজধানীর কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টিভিতে ক্লাস প্রচার হলেও তাতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুরোপুরিভাবে পোষানো সম্ভব নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেই প্রথমত অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে, তবে তা অতিরিক্ত ফি ছাড়া। সিলেবাসের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দেওয়া যায় কি না, তা ভাবতে হবে। মাধ্যমিকের ষান্মাষিক পরীক্ষা নেওয়া যাবে, তবে প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা বাদ দিতে হবে।’

দেশে ইংলিশ মিডিয়াম বা ইংরেজি মাধ্যম স্কুল আছে দুই শতাধিক। তাতে পড়ালেখা করছে প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী। কিন্তু বেশির ভাগ স্কুলই নিশ্চুপ রয়েছে। দুই-চারটি স্কুল লেখাপড়ার আদান-প্রদান করছে ওয়েবসাইট বা মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে। অনলাইন ক্লাসের প্রস্তুতিও নিচ্ছে কোনো কোনো স্কুল।

সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আছে দেড় শতাধিক। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা এক প্রকার বন্ধ আছে। দুই-চারটি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে কিছুটা চালু রেখেছে পড়ালেখা। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে সেমিস্টার পরীক্ষা নেওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখতে আহ্বান জানিয়েছে। তবে অনলাইনে পড়ালেখা চালু রাখতে উৎসাহিত করেছে।

প্রতিবছর জুলাই মাসের শেষে অথবা আগস্টের প্রথম দিকে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর শুরু হয় ভর্তিপ্রক্রিয়া। কিন্তু এবার এই সময়ে পরীক্ষা হবে কি না, তা নিয়েই শঙ্কা রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও এরই মধ্যে স্থগিত করেছে তাদের সব পরীক্ষা। এতে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকেই সেশনজটে পড়তে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

হঠাৎ করেই মিজানুর রহমান আজহারীকে নিয়ে যে স্ট্যাটাস দিলেন সাইফউদ্দিন, মুহূর্তেই ভাইরাল

হঠাৎ করেই মিজানুর রহমান আজহারীকে নিয়ে যে স্ট্যাটাস দিলেন সাইফউদ্দিন, মুহূর্তেই ভাইরাল

২০২০ সালে দেশ ছাড়ার পাঁচ বছর পর মাহফিলের মঞ্চে ফিরেছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মাওলানা মিজানুর ...

১৪ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে শীর্ষে : বিপিএলে এখনও পর্যন্ত কোনো ম্যাচই হারেনি যে দল

১৪ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে শীর্ষে : বিপিএলে এখনও পর্যন্ত কোনো ম্যাচই হারেনি যে দল

দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ১৪৯ রানের রেকর্ড জয়টা উদযাপন করলেও সেভাবে উপভোগ্য হয়নি ঢাকা ক্যাপিটালের জন্য। ...

ফুটবল

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে নারী ফুটবল দলের হাত ধরে। ২০২২ সালের ...

মাঠে নামছে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা, দেখেনিন সময় সূচি

মাঠে নামছে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা, দেখেনিন সময় সূচি

সম্প্রতি কঠিন সময় পার করছে ব্রাজিল ফুটবল দল। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের জন্য ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব রীতিমতো ...



রে