আবারও হাইকোর্টে উঠছে মি‘ন্নির জামিন শুনানি
মিন্নির পক্ষে জামিন আবেদনটি উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন।
সোমবার দুপুরে জামিন আবেদনের শুনানির শুরুতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না আদালতে বলেন, ‘মাই লর্ড, হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আমরা জামিন আবেদন করেছিলাম। আদালত রুল দিতে চেয়েছিলেন। আমরা নিইনি। আমরা আবেদন ফেরত নিয়েছি। এখন পুনরায় আপনার কাছে জামিনের আবেদন করেছি।’
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ‘এ মামলার এফআরআইয়ে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির নাম নেই। তিনি ছিলেন মামলার প্রধান সাক্ষী। গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে গ্রেফতারের পর তাঁকে রিমান্ডে নেয়া হয়। পুলিশ তাঁকে রিমান্ডে নেয়ার আগেই পুলিশ লাইনে নিয়ে যায়। পুরুষ পুলিশের অধীনে তাকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে দোষ স্বীকার শেখানো বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়। আদালতে হাজির করে পুলিশ দাবি করে, মিন্নি ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মিন্নি এসব বক্তব্য প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এমনকি মিন্নিকে নিম্ন আদালতে উপস্থাপনের পর কোনো আইনজীবী তার পক্ষে দাড়াননি। মিন্নির পক্ষে মামলা না লড়তে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয়। পরে মিন্নি নিজেই আদালতে বলেছেন, আমি নির্দোষ।’
জেড আই খান পান্না আরো বলেন, ‘রিফাত হত্যার আগে-পরে পুলিশ একটি ভিডিওকে ১১ টুকরা করে উপস্থাপন করে।’এ পর্যায়ে আদালত আইনজীবীকে বলেন, ‘জামিনের পক্ষে আপনার যুক্তি কী?’
জবাবে আইনজীবী বলেন, মিন্নি ১৯ বছরের একজন তরুণী। তিনি কলেজে পড়েন। মিন্নির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলায় ষড়যন্ত্র করেছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ডকুমেন্ট আমরা পাইনি। এ মামলার ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও পাইনি, যদিও নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। একজন নারী এবং অসুস্থ বিবেচনায় জামিন আশা করছি। যেহেতু মিন্নি কলেজে পড়েন। জামিন হলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। মিন্নিকে পুলিশ লাইনে নিয়ে পরে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ সময় আদালত জানতে চান, পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আপনারা কি নথিতে উপস্থাপন করেছেন?
জবাবে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘স্টেটমেন্ট আছে।’
পরে আদালত বলেন, মিন্নিকে কবে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়, কবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়, কবে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া হয়, কবে পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে মিন্নি জড়িত বলে বক্তব্য দেন, তা আগামীকাল দুপুর ২টার মধ্যে সম্পূরক আকারে জমা দিন।’ এরপর শুনানি মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। এর আগে ৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অবকাশকালীন বেঞ্চে শুনানির পর জামিন পাওয়ার আশা না দেখে মিন্নির আইনজীবী জেডআই খান পান্না আবেদনটি ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। ওই আবেদনটিই রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে দাখিল করা হয়েছে।
আদালতে ১৬৪ ধারায় মিন্নিসহ আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না আনতে পারলে জামিন হবে না, হাইকোর্টের এমন শর্তের পর ৮ আগস্ট আবেদনটি ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী জেডআই খান পান্না বলেন, ‘আমরা ১৬৪ ধারা পাইনি। আর এ ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে, ১৬৪ নিয়ে আমাকে জামিন আবেদন করতে হবে। চার্জশিট না হলে আমাকে ১৬৪ দেবে কেন পুলিশ। চার্জশিট হওয়ার আগে ১৬৪ দেয়ার বিধান নেই।’
২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
পর দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরিফ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর ছেলে হত্যায় পুত্রবধূ মিন্নির জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়।
১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মিন্নি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ জানায়। পরে মিন্নি জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন আদালতে। মিন্নির বাবার অভিযোগ, ‘নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ।’
গত ৩০ জুলাই মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
এর আগে ২২ জুলাই বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে প্রথমবার মিন্নির জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। ওই দিনই শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
পরে ২৩ জুলাই ‘মিস কেস’ দাখিল করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে ফের জামিনের আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের নথি তলব করে ৩০ জুলাই জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
সেদিন তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের শুনানি হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন আদালত। তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির আদালতে উপস্থিত হলে এ হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়। সবার উপস্থিতিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ল্যাপটপে হত্যাকাণ্ডের আগের ও পরের ভিডিও ফুটেজ দেখান। এ ছাড়া মিন্নির ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিসহ হত্যার আগে ও পরে প্রধান আসামি কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়ন বন্ডসহ অন্যান্য আসামির সঙ্গে মিন্নির কললিস্টের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। শুনানি শেষে মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
- ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ ও ছুটি ঘোষণা করলো সৌদি-আরব আমিরাত
- বন্ধ হয়ে গেল কেকেআরের প্লে-অফের রাস্তা, দেখেনিন পয়েন্ট টেবিল
- ভিসা চালু নিয়ে বিশাল বড় সুখবর দিলেন উপদেষ্টা
- বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন সুনীল নারিন
- দেশের বাজারে কমলো ডিজেল ও পেট্রল তেলের দাম
- ব্রেকিং নিউজ : ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়
- সব শেষ, ভারতীয় ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিলো পাকিস্তান
- বাংলাদেশের জয়ের দিনের সিরিজ সেরা ও ম্যাচ সেরা হলেন যে ক্রিকেটার
- সৌদি পুলিশের সতর্কবার্তা, সকলেই সাবধান
- ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন ড. ইউনুস
- বাড়লো আজকের সৌদি রিয়াল রেট (৩০ এপ্রিল ২০২৫)
- নতুন ঘোষণা দিলো ওমান
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (১ মে ২০২৫)
- কুয়েত প্রবাসীদের জন্য ঈদের ছুটি ঘোষণা করলো কুয়েত সরকার
- ফের হঠাৎ পাল্টে গেল স্বর্ণের বাজার