| ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যে কারণে বোনকে বিয়ের অনুমতি দেন প্রথম স্ত্রী

জাতীয় ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০১৭ জুলাই ১০ ২২:৪৯:২৫
যে কারণে বোনকে বিয়ের অনুমতি দেন প্রথম স্ত্রী

থানা পুলিশের করা সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, নিজের সঙ্গে থাকা সরকারি পিস্তলের গুলিতেই আত্মহত্যা করেছেন এসআই আব্দুস সাত্তার। আর আত্মহত্যার আগে ওই একই অস্ত্র দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী শম্পা খাতুনকে হত্যা করেন তিনি।

এর পরও অধিকতর তদন্তের জন্য পিস্তল থেকে ফিংগারপ্রিন্ট (হাতের ছাপ), নিহত সাত্তার ও শম্পার শরীরে থাকা পোশাকসহ কয়েক ধরনের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে ফিংগারপ্রিন্টের আলামত পাঠানো হবে। এতে স্পষ্ট হবে, কার গুলিতে কে নিহত হয়েছেন।

গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে সাত্তার ও শম্পার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. কবির সোহেল জানান, দুজনেরই মাথায় গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুলি তাদের মাথার বাম দিক দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বের হয়েছে।

রূপনগর থানা পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সতীনের সংসার নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া, মনোমালিন্য ও ক্রোদের বশবর্তী হয়ে এসআই সাত্তার তার নামে ইস্যুকৃত পিস্তল দিয়ে গুলি করলে শম্পা মারা যান। তাকে হত্যার পর পর নিজেই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হন সাত্তার।

নিহত এসআই সাত্তারের গ্রামের বাড়ি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার উজানপাড়ায়। তার বাবার নাম রমজান আলী। একই জেলার সিংড়া উপজেলার ডাকমু- এলাকার শুক্কুর আলীর মেয়ে শম্পা খাতুন (২২)। সাত্তারের প্রথম স্ত্রীর নাম ববিতা আক্তার। শম্পা ছিলেন ববিতার খালাতো বোন। ববিতার ঘরে দুটি ছেলে রয়েছে। বড় ছেলে সাকিব (৯) মিরপুরের মনিপুর স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। দ্বিতীয় ছেলে রাফির বয়স ৩ বছর।

আব্দুস সাত্তার তার দ্বিতীয় স্ত্রী শম্পাকে নিয়ে হত্যা-আত্মহত্যার ঘটনাস্থল রূপনগর আবাসিক এলাকার ২২ নম্বর সড়কের ৩২ নম্বর ‘পান্থনীড়’ বাড়ির ষষ্ঠ তলায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ববিতা তার দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন মিরপুর ১০ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৭৮ নম্বর বাড়িতে।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শম্পা এসএসসি পাসের পর রাজশাহীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্যাথলজি বিভাগে টেকনোলোজিস্ট বিষয়ে পাস করেন। এর পর চাকরির আশায় গত দেড় থেকে দুই বছর আগে ঢাকায় এসে ওঠেন খালাতো বোন ববিতার বাসায়। ওই সময় ববিতার স্বামী ও পুলিশের এসআই আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে শম্পার। ববিতা তার বড় ছেলে সাকিবকে নিয়ে স্কুলে গেলে শ্যালিকা-ভগ্নিপতি অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তেন। একপর্যায়ে বিষয়টি ববিতার নজরে আসে।

তিনি রাগে-অভিমানে শম্পাকে বাসা থেকে বের করে দেন। সেটি এক বছর আগের কথা। শম্পাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ হন সাত্তার। এর পর তিনি শম্পাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

সূত্র জানায়, আইনি ঝামেলা এড়াতে দ্বিতীয় বিয়েতে প্রথম স্ত্রীর সম্মতি চান এসআই সাত্তার। কিন্তু ববিতা এতে সম্মত ছিলেন না। তিনি গ্রামে বসবাসরত শম্পার পরিবারেও এ নিয়ে নালিশ করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তখন শম্পাকে বলা হয় গ্রামে ফিরে যেতে। কিন্তু সাত্তারের সহায়তায় শম্পা রাজধানীতেই পৃথক বাসা ভাড়া নেন।

এদিকে স্বামীর প্রাত্যাহিক নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে এবং দুই সন্তানসহ নিজের ভরণ-পোষণের আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত খালাতো বোন শম্পার সঙ্গে স্বামীর বিয়েতে অনুমতি দেন ববিতা। বিয়ের পর গত জানুয়ারিতে শম্পা-সাত্তার রূপনগরের ভাড়া বাসায় ওঠেন। শম্পা চলতি মাসের শুরুতে মিরপুর ১০ নম্বরের আল শাফী হাসপাতালে ৮ হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন। ওই চাকরির পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হঠাৎ কলহ বেড়ে যায়। পুলিশ আকস্মিক এই কলহের কারণ খুঁজছে।

এদিকে রূপনগরের যে বাড়িতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, ওই বাড়ির মালিকের ছেলে জুবায়ের জানান, বিল ছাড়া মাসিক ৬ হাজার টাকায় এক রুমের ফ্ল্যাট ভাড়া নেন এসআই সাত্তার। সাত্তার প্রতি রাতে এখানেই থাকতেন। খুন হওয়ার পর তারা জানতে পেরেছেন যে, তার প্রথম স্ত্রী রয়েছেন।

রূপনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ মো. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, প্রাথমিকভাবে এটা নিশ্চিত যে, মনোমালিন্যের কারণে হত্যা-আত্মহত্যা। তবে হঠাৎ কী নিয়ে এ পর্যায়ে গেল, সেটাই প্রশ্ন। পুলিশ রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে।

জানা গেছে, পুলিশ বিভাগে কন্সটেবল হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন আব্দুস সাত্তার। এর পর তিনি পদোন্নতি পেয়ে প্রথমে এএসআই ও পরে এসআই হন। সহকর্মীদের সঙ্গে সাত্তারের আচরণ ছিল খুবই ভালো।

ববিতা জানান, খুন হওয়ার আগে শনিবার দুপুর ২টার দিকে তার বাসায় গিয়েছিলেন আব্দুস সাত্তার। সে সময় ববিতাকে তিনি হাতখরচ হিসেবে ৫০০ টাকা দেন। ববিতা তাকে দুপুরের খাবার খেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি না খেয়েই বেরিয়ে যান। তবে সে সময় তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া বা মনোমালিন্য হয়নি। এর পর সন্ধ্যার দিকে তিনি স্বামীর মৃত্যুর খবর পান।

গতকাল রোববার স্বামীর লাশের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন ববিতা। এর আগে রোববার দুপুরে রাজারবাগ হাসপাতালে সাত্তারের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে রূপনগর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।

গত শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে মিরপুরের রূপনগর থেকে আব্দুস সাত্তার ও তার স্ত্রী শম্পার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।-আ. স.

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

এই মাত্র পাওয়া: চমক দিয়ে তামিমকে অধিনায়ক করে ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করলো বিসিবি

এই মাত্র পাওয়া: চমক দিয়ে তামিমকে অধিনায়ক করে ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করলো বিসিবি

ক্রিকেটে আবারও বড় মঞ্চে নামছে বাংলাদেশের যুব দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হতে যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ ...

জ্বলে উঠেছেন তাসকিন, 2 উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ,সর্বশেষ স্কোর

জ্বলে উঠেছেন তাসকিন, 2 উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ,সর্বশেষ স্কোর

মিডল-লেগ স্টাম্পে করা তাসকিনের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিলেন কেচি কার্টি। রানের ...

ফুটবল

পয়েন্ট টেবিল প্রকাশ : ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে আরও যত পয়েন্ট দরকার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার

পয়েন্ট টেবিল প্রকাশ : ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে আরও যত পয়েন্ট দরকার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার

২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক ফুটবল সূচির প্রায় শেষ প্রান্তে এসে নিজেদের বছরের শেষ ম্যাচ খেলেছে দক্ষিণ ...

২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা পেতে আরও যত পয়েন্ট দরকার আর্জেন্টিনার

২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা পেতে আরও যত পয়েন্ট দরকার আর্জেন্টিনার

লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আর্জেন্টিনা। পেরুর বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে ২৫ ...



রে