বাংলাদেশের হয়ে সাকিব আল হাসান একাই নিন ৬ টি উইকেট এছাড়া মিরাজ দুইটি আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী এবং তাইজুল ইসলাম একটি করে উইকেট লাভ করেন। এই ম্যাচে জয়লাভ করতে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ৩৩৫ রান।

৩৩৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল। এ দিন ব্যাট করতে নেমে শূন্য রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তামিম ইকবাল। এরপর মমিনুল হকের সাথে নিয়ে কিছুটা ওয়ানডে স্টাইলে ৩৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন লিটন কুমার।

দলীয় ৪৯ সালে মাত্র ৩৩ রান করে লিটন দাস আউট হলে দলীয় ৫২ রানের মাথায় ১৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মমিনুল হক। ফর্মের বাইরে থেকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এ দিনও সুবিধা করতে পারেনি। চার রান করে তিনিও প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ৬৭ রানের মাথায়।

এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। কিন্তু দলীয় ১২১ রানের মাথায় মুশফিকুর রহিম ৩১ এবং পরের বলেই নুরুল হাসান শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। সাকিবকে একা রেখে দ্রুতই ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ।

তবে এদিন ব্যাটিং বোলিং দুই বিভাগেই যেন নিজের সেরাটা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বল হাতে ৬ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতেও অসাধারণ করেছেন তিনি। ৭৯ বলে দশটি চারের সাহায্যে ক্যারিয়ারের ২৩ তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।

তবে ইনিংসটাকে বেশিদূর নিতে পারেননি বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। ৫৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এরপর দলীয় ১৬৮ রানের মাথায় কামরুল ইসলাম রাব্বি এবং আবু জাহেদ রাহি আউট হলে ১৬৮ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ৬ উইকেট লাভ করেন। ২ ইনিংস মিলে ১১ উইকেট নিয়ে এই ম্যাচের ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়ক।

তৃতীয় দিনের শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। গতকাল ১৯ রানে ১ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ অাজ তৃতীয় দিনের ২৮ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটে তুলে নেন সাকিব। স্মিথ ক্যাচ ক্যাচ আউট করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাকিব আল হাসান।

এরপরেই কিমো পলকে ১৩ এবং পরের ওভারে এসেই পাওয়েলকে ১৮ রানে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব। এরপর দলীয় ৬৪ রানের মাথায় শাই হোপকে আউট করেন তাইজুল ইসলাম। এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও দলের ৯৭ রানে উইকেট তুলে নেন আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী।

লাঞ্চ বিরোধী থেকে ফিরে এসে বোলিং ভেলকি দেখাতে থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ। রোস্টন চেজকে ৩২ রানে এবং জেসন হোল্ডারকে ১ রানে অাউট করেন মিরাজ। এর পরের ওভারেই মিগুয়েল কামিন্স কে আউট করে ক্যারিয়ারে ১৮ তম ৫ উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। এই ওভার শেষ বলে গ্যাব্রিয়েল আউট করেন সাকিব।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে প্রথম টেস্টের মত একই দশা দ্বিতীয় টেস্টে। যদিও দ্বিতীয় দিনের শুরুটা চমৎকার করে বাংলাদেশের বোলাররা। ৫৮ রান তুলতেই বাদবাকি ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৫৪ রানের মধ্যেই আটকে দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটিংয়ে যেন করতে ভুলে গেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

১৪৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলোঅন এগাতে আরো ৫ রান কম থাকলেও অবশ্য ক্যারিবিয়রা ফলোঅন করায়নি। ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ১৯ রান সংগ্রহ করে দিন শেষ করে তারা। উইকেটটি নিয়েছে সাকিব অাল হাসান।

এদিন আগের দিনের ৪ উইকেটে ২৯৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আবু জায়েদ রাহী, মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ৫৯ রান যোগ করতেই গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়রা। মিরাজ ৫ উইকেট নেন। জায়েদ ৩টি ও তাইজুল ২ উইকেট নেন।

এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল ও লিটন দাস উদ্বোধনী জুটিতে ২০ রান যোগ করেন। লিটন দাসকে (১২) এলবিডব্লিউ করে ফেলান গ্যাব্রিয়েল। দুই বলের ব্যবধানে মুমিনুল হককেও (০) ফিরিয়ে দেন। ২০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে যেন আগের ব্যর্থতার পথেই হাটা বাংলাদেশের।

তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান অবশ্য পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়লেন। তৃতীয় উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন এই দু’জন। কিন্তু ৩২ রান করা সাকিবকে বোল্ড করে ফেরান উইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। এক বলের ব্যবধানে মাহমুদউল্লাকেও ফিরিয়ে দেন। অর্থাৎ গ্র্যাব্রিয়েলের করা ইনিংসের সপ্তম ওভার ও হোল্ডারের ২৪তম ওভারেই বাংলাদেশের মেরুদণ্ড ভাঙে।

৪ উইকেটে ৯২ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম চা বিরতির পর ব্যাটিং শুরু করেন। কিন্তু বেশি দূর দলকে টানতে পারলেন না। চা বিরতির পর আর মাত্র ৫৭ রান যোগ করতেই ৬ উইকেট হারিয়ে অল আউট হয় টাইগাররা।

তামিম ইকবালকে ফিরান কিমো পল। সর্বাধিক ৪৭ রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। পরের বলেই ডাক মেরে ফিরে যান নুরুল হাসান সোহান। ১১ রানের ব্যবধানে ফিরে যান মুশফিকুর রহীমও। ২৪ রান করে হোল্ডারের বলে ফিরেন তিনি। এরপর ৩ রান করা মিরাজকে ফিরান কামিন্স।

১৩৫ রানে ৮ উইকেট হারানো কিছুটা বাড়ে তাইজুল ইসলামের ব্যাটে। হোল্ডারের শিকার হওয়ার আগে ১৮ রান করেন তিনি। জায়েদকে বোল্ড করে ৫ উইকেট পূরণ করেন তিনি। হোল্ডার ছাড়া গ্যাব্রিয়েল ও পল ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।