বিশ্বকাপে কলম্বিয়ানদের সবচেয়ে বড় দুই স্বপ্নসারথি ছিলেন রাদামেল ফ্যালকাও ও হ্যামেস রদ্রিগেজ। কিন্তু কলম্বিয়ার আক্রমণভাগের এই দুই সেরা অস্ত্র রাশিয়ায় ছিলেন নিষ্প্রভ। অধিনায়ক ফ্যালকাও ৪ ম্যাচে করেছেন ১ গোল। রদ্রিগেজ ৩ ম্যাচে একটি গোলও করতে পারেননি।

আক্রমণভাগের এই দুই তারকার ব্যর্থতার পরও কলম্বিয়া দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল মূলত ইয়েরি মিনারের কাঁধে চেপেই। রাশিয়া বিশ্বকাপে ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনা যেন কলম্বিয়ার স্ট্রাইকারই বনে গিয়েছিলেন।

চোটের কারণে জাপানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি খেলতে পারেননি ইয়েরি মিনা। সেই ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে যায় তার দল। পোল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রথম গোলটি করেন ইয়েরি মিনা। পরে ফ্যালকাও ও কুয়ার্দাদোর গোল মিলিয়ে কলম্বিয়া ম্যাচটা জিতে ৩-০ গোলে।

এরপর সেনেগালের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে হলে জিততেই হবে। এই ম্যাচেও ত্রাতা ইয়েরি মিনা। খেলার ৭৪ মিনিটে তার দেয়া একমাত্র গোলেই জয় নিয়ে কলম্বিয়া গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পা রাখে নক-আউট পর্বে।

শেষ ষোলয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে ছিলেন ইয়েরি মিনা। ৫৭ মিনিটে হ্যারি কেনের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে যোগ করা সময়েরও ৩ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে ইংল্যান্ড।

ঠিক খাদের এই কিনারায় দাঁড়িয়ে কলম্বিয়াকে উদ্ধার করলেন ইয়েরি মিনা। এবারও কর্নার থেকে উড়ে আসা বল দুর্দান্ত হেডে জড়িয়ে দেন জালে। হারের দরজায় দাঁড়িয়ে সমতায় ফেরে কলম্বিয়া। জেগে উঠে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আশা।

কিন্তু তাদের সেই আশা নিরাশায় পরিণত হয়েছে পেনাল্টি শ্যূট-আউট নামের ভাগ্য-পরীক্ষায়। এই যাত্রায় আর দলকে রক্ষা করতে পারেননি কলম্বিয়ার তারকা ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনা। অনন্য এক রেকর্ড গড়েও তাকে থামতে হলো শেষ ষোলতে।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘদেহী ফুটবলারদের একজন ইয়েরি মিনার উচ্চতা ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি। এই উচ্চতাকে কাজে লাগিয়েই রাশিয়ায় বাজিমাত করেছেন। হেডে গোল করে দলকে বারবার বাঁচিয়েছেন। ডিফেন্ডার হিসেবেও ছিলেন সফল। তার তিন ম্যাচে কলম্বিয়া গোল হজম করেছে মাত্র ১টি, সেটিও পেনাল্টি থেকে।

অবশ্য গত জানুয়ারির আগে কলম্বিয়ান এই ডিফেন্ডারকে চিনতই না ফুটবল দুনিয়া। ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাস থেকে তাকে ১১.৮ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে কিনে নেয় বার্সেলোনা। আর রাশিয়া বিশ্বকাপে তো ইয়েরি মিনা তারকাই বনে গেলেন।