গোল্ডেন গ্লাভস জয়ের দৌড়ে এগিয়ে যারা

গোলরক্ষকের কাজটা এমনই। কোনো ভুল করা যাবে না। একটা ভুল হলেই এর মাশুল হবে চরম। আবার নির্ভুল খেলে দলকে জয় এনে দিলেও সুনাম পাওয়া যায় কই ? তিনি তো আর মাঠে কারিকুরি দেখিয়ে দর্শক মন জয় করেননি!
দৃষ্টিসুখকর অসধারণ ড্রিবলিং বা বাইসাইকেল কিক করে গোল করেননি! তাই তাকে কে মনে রাখে? গোলরক্ষকের কাজটা একটি থ্যাঙ্কসলেস জব। আবার এই গোলরক্ষকরাই মাঠে নিজ দলের বাকি ১০ জন থেকে অনেকটাই আলাদা। খেলার সময় অনেক সময়ই ১০ জন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। ট্রেনিংও হয় আলাদা।
সব মিলিয়ে গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন বিষন্নতায় ভরা।
তবে তিনি একটি দলের অভিভাবকের মতো। সবাই ম্যাচে যেমনই খেলুক, তিনি সদা প্রস্তুত। তিনি আগলে রাখেন দলের সম্মান। জাতীয় দল হলে তো কথাই নেই। জাতির সম্মান নির্ভর করে তার গ্লাভস জোড়ায়। প্রতিবারই বিশ্বকাপে নতুন ও পুরাতনদের মধ্য থেকে কয়েকজন গোলরক্ষক দর্শকমনে ছাপ রেখেছেন। তাদের জন্য আলাদা একটি পুরস্কারেরও ব্যবস্থা আছে বিশ্বকাপে, গোল্ডেন গ্লাভস।
রাশিয়া বিশ্বকাপে কয়েকজন গোলরক্ষক, যারা গোল্ডন গ্লাভস জয়ের দৌড়ে এগিয়ে, তাদের নিয়ে এবারের আয়োজন।
আকিনফিভ (রাশিয়া)
পুরো ম্যাচ জুড়েই দুর্দান্ত খেলেছে স্পেন। বল দখলের লড়াইয়ে তারা রাশিয়ার চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল। স্প্যানিশরা ৭৯ শতাংশ সময় ধরে বল দখলে রেখেছিল। রাশিয়া বল দখলে রেখেছিল ২১ শতাংশ সময় ধরে। স্পেন লক্ষ্যে শট নিয়েছে নয়টি। রাশিয়া লক্ষ্যে শট নিয়েছে মাত্র একটি।
সব পরিসংখ্যানে স্পেন এগিয়ে থাকলেও দিন শেষে জয়টি পেয়েছে রাশিয়া। আর রাশিয়ার এই জয়ে মূল নায়ক গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ। তার দৃঢ়তায় রাশিয়া এবারের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে। রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে টাইব্রেকারে স্পেনকে ১(৪)-১(৩) ব্যবধানে হারিয়েছে রাশিয়া।
পুরো ম্যাচে আকিনফিভ ছিলেন দুর্দান্ত। তিনি স্পেনের কঠিন আক্রমণগুলো দক্ষতার সাথে না ঠেকাতে পারলে ম্যাচটিতে জয় পেতে পারত স্পেন। কিন্তু তিনি সেটি হতে দেননি। ম্যাচে স্পেন মুহুর্মুহু আক্রমণ করেছে। তিনি আকিনফিভ সব আক্রমণ রুখে দিয়েছেন।
টাইব্রেকারে আকিনফিভ ছিলেন আরো দুর্দান্ত। স্পেনের দুইটি শট ঠেকিয়ে দেন তিনি। স্পেন পাঁচটি কিক নেয়ার সুযোগ পায়। এর মধ্যে তারা তিনটিতে গোল করে। দুইটি শট ঠেকিয়ে দেন আকিনফিভ। গোল করতে ব্যর্থ হন কোকে ও আসপাস। অন্যদিকে, রাশিয়া চারটি কিক করে চারটিতেই গোল করতে সক্ষম হয়। এই ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন রুশ গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ। গোল্ডেন গ্লাভস জয়ের দৌড়ে সবার আগে তিনি।
আলিসন বেকার (ব্রাজিল)
ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক। খেলেন ইতালিয়ান লিগ সিরি আ’র ঐতিহ্যবাহী দল রোমায়। গত মৌসুমে রোমার গোলবারের নিচে অসাধারণ এক মৌসুম কাটিয়েছেন। রোমার অন্যতম প্রভাবশালী একজন খেলোয়াড়ে পরিণত করেছেন নিজেকে।
রোমার হয়ে ৩৪ ম্যাচে ১৫ ক্লিনশিটই বলে দেয় রোমার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তিনি।
গোলবারের নিচে অসাধারণ রিফ্লেক্স ও ম্যাচের পরিস্থিতি পড়ার ক্ষমতা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এক গোলকিপারে পরিণত করেছে। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ইউরোপের বাঘা বাঘা ক্লাব তাকে দলে টানতে উঠে-পড়ে লেগেছে। লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদ আলিসনকে পেতে মরিয়া। ৭০ মিলিয়ন ইউরোর নিচে যে কোনো দলই তাকে পাবে না এটা ইতোমধ্যে স্পষ্ট।
বিশ্বকাপেও ব্রাজিলের ভরসা আলিসনের ওপর। ব্রাজিলের নকআউটে আসার পেছনে তার অবদান অনেক। শেষ পর্যন্ত ব্রাজিল ফাইনাল খেলতে পারলে, তার হাতেই উঠবে গোল্ডন গ্লাভস।
থিবাউত করতুয়াস (বেলজিয়াম)
ইংলিশ ক্লাব চেলসিতে খেলেন। লিভারপুলের সিমন ম্যাগনলেটরের চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়েছে তাকে। তবে ২০১৭/১৮ মৌসুমে ম্যাগলটের বাজে পারফরম্যান্সে এখন করতুয়াস বেলজিয়াম দলে একক পছন্দ। ২০১৪ বিশ্বকাপেও বেলজিয়ামের হয়ে প্রত্যেক ম্যাচেই তিনি প্রথম একাদশে খেলেছেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
চেলসির ২৬ বছর বয়সী এই স্টার গোলরক্ষক নীল জার্সি গায়ে দিয়ে দারুণ এক মৌসুম কাটিয়েছেন। ১.৯৯ মিটার লম্বা এই তারকা গোলরক্ষক একাই বেলজিয়াম দলের অন্যতম এক শক্তি। তার হাত গলে বেলজিয়ামের জালে বল পাঠাতে প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকারদের বিশেষ বেগ পেতে হয় তা গত কয়েক ম্যাচে দেখা গেছে। বেলজিয়াম যদি সেমি ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারে, তিনিও গোল্ডেন গ্লাভসের অন্যতম দাবীদার হবেন সন্দেহ নেই।
হুগো লোরিস (ফ্রান্স)ফ্রান্সের জার্সি গায়ে গোলরক্ষক হিসেবে সবচে’ বেশি ম্যাচ খেলার ইতিহাস গড়লেন হুগো লোরিস। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ৮৮তম ম্যাচ খেলতে নেমে এ ইতিহাস গড়েন তিনি। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক ফাবিয়েন বারথেজকে পেছনে ফেললেন টটেনহাম গোলরক্ষক।
২০০৮ সালে উরুগুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয় লোরিসের। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন দলের অবিচ্ছেদ্য অংশে। সম্প্রতি দলের অধিনায়কের দায়িত্বও পেয়েছেন। ফ্রান্সের হয়ে চারটি বড় টুর্নামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেন লোরিস। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে কোচ দিদিয়ের দেশামকে আরেকটি শিরোপা উপহার দেয়ার স্বপ্ন দেখছেন ৩০ বছরের ফুটবলার।
লোরিসের সামনে এখন অপেক্ষা করছে ফ্রান্সের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব অর্জনের। আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্স। ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারলে লোরিসের হাতেই উঠতে পারে গোল্ডেন গ্লাভস!
- কমলো সয়াবিন তেলের দাম, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
- স্বর্ণের ভরি আজ হঠাৎ কত হলো জানেন
- মালয়েশিয়ায় ৫ শতাধিক বিদেশি গ্রেপ্তার, বেশির ভাগই বাংলাদেশি
- নাটকীয়ভাবে অবিশ্বাস্য সুখবর পেলো বাংলাদেশ
- নাসুমকে চড় মারার চাঞ্চল্যকর অভিযোগের জবাবে মুখ খুললেন হাথুরু-সাথীরা
- বিদেশি ফল নয়, ঘরেই লুকিয়ে আছে সমাধান এই ৫ দেশি খাবারেই পাবেন পর্যাপ্ত ভিটামিন সি
- শীর্ষে দিল্লি,২ নাম্বারে ঢাকা