| ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ব্র্যাকের বিরুদ্ধে ছাঁটাই হওয়া কর্মীর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

জাতীয় ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০১৭ জুলাই ০২ ০১:০৭:২৩
ব্র্যাকের বিরুদ্ধে ছাঁটাই হওয়া কর্মীর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

তসলিম লিখেছেন, ‘১৯৯১ সনের ফেব্রুয়ারি মাস, ২৬ বছর আগে ব্র‍্যাক হতে চিঠি পেলাম ২৩ শে ফেব্রুআরি ঝিনাইদহ জেলার অজপাড়াগায়ে অফিস ডাকবাংলাবাজারে যোগদানের জন্য। আমি তখন বর্তমান শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলে সিংগেল রুমে মাসে মাত্র ১২ টাকা ভাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বতম এবং বর্তমান ভিসির (তখন হল তত্ত্বাবধায়ক) স্নেহ ও ভালবাসার প্রশ্রয়ে বিশাল আরামে থাকি। তখনকার শ্রদ্ধেয় সকল স্যারগণ (৬৩ জন) আমাকে সন্তানের মতো ভালবাসতেন এবং স্যারসহ সকল বন্ধুবান্ধব এক বাক্যে ব্র‍্যাকে যোগদান না করতে বললেন।

বন্ধুরা তখন বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত (এখন তারা ১ জন রাস্ট্রদূত, ৯ জন জয়েন্ট বা ডেপুটি সেক্রেটারি, ৩ জন পুলিশের ডিআইজি, ১ জন টেক্সে ডিভিশনের জয়েন্ট কমিশনার, ১৭ জন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি সম্পাসারণ অধিদপ্তরের ডিডি বা এডিডি), তারা আমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে, আমাকে ব্র‍্যাকে জয়েন করতে বারণ করল, বিসিএসে চেষ্টা করতে বলল। আমি যাতে গোপনে চলে না যাই, কয়েকজন আমার রুম রীতিমতো পাহারা দিত। মাথায় ভুত চাপল, সকলকে উপেক্ষা করে অতি ভোরে সংগোপনে রুমে তালা দিয়ে প্রিয় হল ত্যাগ করে ব্র‍্যাকের অজোপড়াগায়ের অফিস ঝিনাইদহে ব্র‍্যাকের মাঠ পর্যায়ের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার পদে যোগদান করলাম। তবে এখানে যোগদানে আমার আম্মা খুব উৎসাহ দিলেন।

এরপর ওই অফিস হতে আঞ্চলিক অফিস যশোর, জোনাল অফিস বগুড়া হয়ে ঢাকায় এলাম। এসব অফিসের সকলে আমাকে খুবই ভালোবাসতো। ঢাকা এসে তখনকার সময়ে ডাইরেক্টর পরে ব্র‍্যাকের নির্বাহী পরিচালক এবং ব্র‍্যাকের কারিগর আমিন ভাইয়ের স্নেহের মধ্য পড়ে গেলাম। উনি পোষ্ট গ্রাজুয়েশনের জন্য হল্যান্ড পাঠালেন, দেশে তখনকার সময়ের ব্র‍্যাকের কৃষি প্রোগ্রামের দায়িত্ব দিলেন এবং পরিস্থিতি বুজে ফাইনানশিয়ালি একটু আপগ্রেড হওয়ার জন্য আফগানিস্তান, পরে তানজানিয়া এবং সাউথ সুদান পাঠালেন।

আমি দেশে থাকতে স্ত্রী সন্তান ঢাকায় রেখে বাংলাদেশের একপ্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়াই, ৯৬-এর বন্যায় ব্র‍্যাকের মোহম্মদপুর ইউনিটের দায়িত্ব দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়, আমার প্রথম ছেলের বয়স দুদিন, আমার বউ তখন পুরোপুরি বিছনায় সজ্জাশায়ী। আমি বন্যাদুর্গতদের রুটি বানানোর শুরুর জন্য ভোর ৫টায় বাসা হতে বের হই, রাত ১১ টায় আসি। সকলে আবেদ ভাইকে খুশী করার জন্য উনার বানিয়াচং এলাকায় ব্র‍্যাকের ২০-৩০ লাখ টাকা খরচ করে হাওড়ে দুই বছর ধান লাগাই, এক ট্রাক ধান চোর খোঁজ করতে যেয়ে আম্মার ফোন পেয়েও রাতে রওয়ানা না হয়ে,

ভোরে রওয়ানা হওয়ায় আব্বার লাশটা ঠিকমতো দায়িত্ববান ছেলের মতো দাফন করতে পারিনি, যা আজও বুকটা খচ খচ করে। এভাবেই জীবনময় ব্যস্ততায় সততা সহকারে গত ২৬ বছর দেশ বিদেশে কাজ করে যাচ্ছিলাম। গত ৪-৫ বছর হয় ব্র‍্যাকের মানবসম্পদ বিভাগে আবেদ ভাইয়ের ৪র্থ স্ত্রীর ভাইয়ের মেয়ে তাহিয়া হোসেন ডাইরেক্টর হিসাবে যোগদান করে, ব্র‍্যাক কর্মকর্তাদের এতদিনের সুশৃংখলিত লেভেল বা ধাপ কী এক আজব পদ্ধতি বের করে সবাইকে ইচ্ছামত নতুন গ্রেডে পদায়ন করেন। সকলে এটায় মারাত্মক অসন্তুষ্ট হলে তাহিয়াকে আবেদ ভাই রিজাইন করতে বললে আবেদ ভাইয়ের বউ আবেদ ভাইকে ত্যাগ করার হুমকি দেন যা সকলকে আবেদ ভাইয়ের আপন একজন জানিয়ে দেন।

এই মেয়ে তাহিয়ার আগের সংস্থাও কর্মীদের এমন করায় সংস্থার ৭২০ জনের ৬০০ লোক নাকি এককসাথে সংস্থা ছেড়েছিল। ও আরেকটা কাজ হাতে নেয়, আবেদ ভাই বেঁচে থাকতে থাকতে পুরাতন সব বিশেষ করে ত্যাগী কর্মীদের বিদায় করা। এভাবে প্রথমে সকলের অতি প্রিয় ডাইরেক্টর বাবর ভাই, রাবেয়া আপা এরপর নিজ আত্মীয় মৌসুমী খান, ড. ইমরান মতিন, মো: রুমি আলী, ফুসতিনা পেরেয়ারা, তানভির রহমান সহ অনেক অনেক প্রোগ্রাম হেডসহ সকল স্তরের আর সর্বশেষে ব্র‍্যাকের নিবেদিত হিসাব বিভাগের সিএফও এস এন কৌরিকে গতকাল বিদায় দেন।

ব্র‍্যাককে বর্তমানে তিনটি ভাগ করা হয়েছে, ১টা ভাগ হলো ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ব্র‍্যাকের ১৭ টি সরাসরি ব্যবসা, এখানে এনজিও টার্মে এটাকে বলে এন্টারপ্রাইজ, এই অংশ দেখেন আবেদ ভাইয়ের মেয়ে তামারা আবেদ। ২য় অংশ দেখেন আবেদ ভাইয়ের একমাত্র ছেলে মাইক্রোক্রেডিটসহ সকল লোন ব্যবসা। তবে আবেদ ভাইয়ের এই ছেলেটা অনেক ট্যালেন্ট ও বুদ্ধিমান। ব্র‍্যাকের এক মেয়েকে কোনো এক কারণে বিয়ে করলেও তাকে এখনও ডাইরেক্টর বানায়নি। তৃতীয় অংশ বাকি-সব দেখে তামারার স্বামী সিনিয়র ডাইরেক্টর আসিফ সালেহ। আরেকজন আছেন নির্বাহী পরিচালক উনি হলেন আবু মুসা। তিনি মাসের শেষ কর্মদিবসে ১০০-২০০ লোককে বিদায়ের চিঠি দেয়ার স্বাক্ষর করেন।

গত ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ ব্র‍্যাকের এন্টারপ্রাইজের মানব সম্পদ দেখেন কিবরিয়া, তাকে আবার সিস্টেমে ভাই ভাই করতে হয়, সে বলে তসলিম ভাই, আপনি একটু আজিজ ভাইয়ের রুমে আসেন। তার রুমে ঢুকলে বলা হলো, আমাকে নাকি রিটেয়ারমেন্ট দিয়েছে বলে একটা চিঠি আমার হাতে দেয় (সংযুক্ত)। আমার মাথায় যেন বজ্রপাত হলো, বউ আম্মা দুজনই মারাত্মক অসুস্থ, তাদের ও আমারসহ মাসে প্রচুর টাকার ঔষধ,

দুই বাবুর পড়াশোনার অসম্ভব খরচ, বাসার খরচ কী হবে, বুকটা ভেঙে কান্না এলো, বউকে হালকা করে বললাম, সেও দেখলাম চুপ বনে গেল, হয়ত কাঁদছে। বুকটা হাহাকার করে উঠল, এতদিনের পরিচিত অঙ্গন এক নিমিষে শেষ? প্রোগ্রামের কলিগদের সকলের মধ্য খবর চলে গেল, সকলের চোখে পানি, আজিজ পরদিনই যাতে আমার বিদায় অনুষ্ঠান হয়, তোরজোর শুরু করল। সে হয়ত পূর্ব হতে জানতো।

আমি আমার বাসায় আসা অনেকদিনের পরিচিত গাড়িতে বসে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছি আর গাড়ির কলিগদের আমার চিঠি দেখাচ্ছি, কেহ কেহ চোখ মুছল। বাসায় আসলাম, দুই ছেলে আমাদের রুমে পারতোপক্ষে আসে না, আর এলেও আমাদের বিছানায় বসে না। আজ দেখলাম বাবার এই কঠিন মুহূর্তে ওরা বিছানায় এসে বসল, সবাই আমাকে করুণার চোখে দেখছে, আমি চিঠিটা ওদের পড়তে দিলাম, আমি অনেক কষ্টে কান্নাটা চেপে রাখছি, বড়বাবু বললো, আম্মু আর আমাদের দিকে না দেখে সারা জীবন ব্র‍্যাক ব্র‍্যাক করলা আর আজ এক কাগজে চাকরি শেষ?

কই আমি হাত খরচ একটু বাড়ার চাপ দিব, এখন তো কি যে হয়? সবচেয়ে অবাক হলাম ব্র‍্যাকের এক সময়ের এক কম্পিউটার টাইপিস্ট আমার To whom concern পেপারে স্বাক্ষর করেছে ( সংযুক্ত)। ব্র‍্যাকের বছরের বাজেট ৪৫০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত থাকে ১৩০০ কোটি টাকা ( ২০১৫ সালের বার্ষিক রিপোর্ট), সুদের ব্যবসায় লাভ গত বছর ২০০০ কোটি টাকা, এর থেকে কর্মীদের বেতন দেয়া লাগে মাত্র ১০-১২ কোটি টাকা, কীসের অভাব ব্র‍্যাকের? সকলকে অনুরোধ আমরা এই বয়সে চাকরির জন্য কেন ঘুরব? পরিবারে, সমাজে, বন্ধুদের কাছে, আত্বীয়স্বজনের কাছে কেন আজ এতো ছোট হলাম, কি দোষ ছিল আমার ও আমাদের? একটা দোষ ব্র‍্যাক যদি দেখাতে পারে তবে মাথা হেট করে মাফ চাব। তাই সবাইকে অনুরোধ:

১. বিনা কারণে ত্যাগী, সৎ কর্মীদের ছাটাই করে আবেদ ভাইয়ের ছেলেমেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের আত্মীয়-স্বজন নিয়োগের প্রতিবাদ করুন, কারও কোনো ক্ষমতা থাকলে বন্ধের ব্যবস্থা নিবেন।

২. ট্যাক্স ভ্যাট ফাঁকি দেয়া গরিব লোকের ৫০০ টাকার জিনিস ৫০০০ টাকায় বিক্রিত আড়ং-এর শপিং আজ হতে বন্ধ করুন।

৩. আমি নিজে দেখেছি, ঘন করার জন্য আড়ং দুধে বস্তাভরা দুই নাম্বার গুঁড়া দুধ মিশায়। এ জন্য ব্র‍্যাকের কোনো কর্মী আড়ং দুধ বিনা পয়সায়ও খায় না। আমার ইচ্ছা ছিল গাজীপুরের আমার দোস্ত ডিসি এসএ আলমকে দিয়ে হাতে নাতে ধরাব। ও আবার বদলি হয়ে গেল। এটা ধরুন।

৪. পুরাতন বীজ নতুন প্যাকেটে ভরে বেচে এটা এবার করলে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে বেঁধে ধরা হবে।

৫. হাট বাজার থেকে দালাল দিয়ে ব্রয়লার মুরগি কিনে ব্র‍্যাক মুরগি নামে বেচে। এটা খাবেন না।

আমি বিভিন্ন অ্যাম্বাসিতে লিখব। এখন এই ৪ জনের কাজ হলো মাসে ২০ দিন খালি বিদেশে যাওয়া এবং ব্র‍্যাকের টাকা পাচার করা, যাতে এদের ভিসা না দেয়।

সরি ফর অল, আমার এই ক্রন্তিকালে সকলে দোয়া করবেন।’

ক্রিকেট

এই মাত্র পাওয়া: চমক দিয়ে তামিমকে অধিনায়ক করে ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করলো বিসিবি

এই মাত্র পাওয়া: চমক দিয়ে তামিমকে অধিনায়ক করে ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করলো বিসিবি

ক্রিকেটে আবারও বড় মঞ্চে নামছে বাংলাদেশের যুব দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হতে যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ ...

ভারতকেঅল্প রানে অলআউট করে উল্টো বিপদে অস্ট্রেলিয়া

ভারতকেঅল্প রানে অলআউট করে উল্টো বিপদে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের সামনে টিকতে না পারার পর ভারতীয় বোলাররা ম্যাচে ফিরিয়েছেন দলকে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ...

ফুটবল

পয়েন্ট টেবিল প্রকাশ : ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে আরও যত পয়েন্ট দরকার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার

পয়েন্ট টেবিল প্রকাশ : ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে আরও যত পয়েন্ট দরকার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার

২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক ফুটবল সূচির প্রায় শেষ প্রান্তে এসে নিজেদের বছরের শেষ ম্যাচ খেলেছে দক্ষিণ ...

পয়েন্ট টেবিলে অবনতি : বিশ্বকাপের টিকিট পেতে যে সমীকরণ মেলাতে হবে ব্রাজিলকে

পয়েন্ট টেবিলে অবনতি : বিশ্বকাপের টিকিট পেতে যে সমীকরণ মেলাতে হবে ব্রাজিলকে

কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে নিজেদের চেনা ছন্দে নেই ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিল। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা লাতিন আমেরিকা ...



রে