সোহেল মিয়া প্রবাসে চলে যাওয়ার পরই স্বামীর শুণ্যতা অনুভব করে শাহানা, স্বামীর আদর সোহাগ ভালোবাসার কথা মনে হতেই মন খারাপ হয়ে যায় শাহানার, এক বছরের মেয়ে শারমিনকে নিয়েই সময় কাটাতে চায় শাহানা, স্বামীর বাড়ীতে শ্বশুড় শ্বাশুড়ীর সেবাযত্ম, মেয়ের লালন পালনের মাঝেও স্বামীর শুণ্যতা ভালো ভাবেই অনুভব করে শাহানা, শ্বশুড় শ্বাশুড়ীও শাহানার একাকিত্বের কথা বুঝতে পারে, তাই পিত্রালয়ে গিয়ে কিছুদিন থেকে আসলে পুত্রবধুর মনটা ভালো থাকবে বাবার বাড়ীর সবার সাথে মিলে মিশে, এটা ভেবেই শাহানার শ্বশুর বৌমা ও নাতনিকে বিয়াইয়ের বাড়ীতে রেখে আসে।

বাবার বাড়ীর সবার সাথে হাসিখুশিতেই সপ্তাহখানে সময় পাড় হয়ে যায়। এই সময় শাহানাদের পাশের এলাকার সুমন শাহানাদের বাড়ীতে আসে, শাহানাকে দেখে পুরনো স্মৃতিতে ফিরে যায় সুমন, শাহানাকে অসম্ভব ভালোবাসতো সুমন, কিন্তু শাহানা তেমন পাত্তা দিতো না, তবে খুব একটা খারাপও লাগতো না সুমনকে, ভালোলাগা কিংবা ভালোবাসা হবার আগেই শাহানার বাবা সোহেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয় শাহানাকে।

সুমন শাহানার সাথে দীর্ঘসময় আলাপ করে, মেয়েদের বিয়ের পর বাবার বাড়ীতে এসে কোন বন্ধুর সাথে আলাপ করতে তেমন কোন সমস্যা হয় না, কিন্তু বিয়ের আগে কোন ছেলের সাথে আলাপ করলেই মাবাবা কিংবা পাড়াপ্রতিবেশী সন্দেহের চোখে দেখে কিন্তু বিয়ে হয়ে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই দেখে সবাই।

সুমন শাহানার নাম্বার চায়, ফোনে কথা বললে আপত্তি আছে কিনা শাহানাকে জিজ্ঞাসা করে, শাহানাও আপত্তি না জানিয়ে ফোন নাম্বার দেয়, সুমন শাহানার নাম্বার নেওয়ার পর প্রতিদিনই বেশ কয়েকবার সুমনের সাথে কথা হয় শাহানার। প্রতিদিন সুমনের সাথে যতবার কথা হয়, ততবার স্বামীর সাথেও কথা হয় না শাহানার।

সুমনের সাথে বেশ সুসম্পর্ক হয়ে যায় শাহানার, সুমনও কামনার দৃষ্টিতে তাকায় শাহানার দিকে, স্বামী না থাকায় সমস্যা, বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে শাহানাকে আবেগী করে তোলে। শাহানাও সুমনের কথায় ভেঙ্গে পড়ে। এই বয়সে স্বামী থেকেও কাছে নেই তার, শরীরের চাহিদা মিটাতে না পেরে শাহানাও কেমন জানি হয়ে যায়, পাশাপাশি সুমনের অন্তরঙ্গ কথাবার্তায় আকৃষ্ট হয়ে যায় শাহানা।

সুমনের সাথে ফোনে এবং সরাসরি কথাবার্তায় সুমনের প্রতি দুর্বল হতে থাকে শাহানা। কিছুদিন ধরে স্বামীর সাথেও তেমন কথাবার্তা বলে না। এক নিষিদ্ধ সম্পর্কের দিকে ধাবিত হয় সুমন ও শাহানা। সুমন মোবাইলে এবং সরাসরি শাহানাকে একান্তে কাছে পাবার আকুতি জানায়, শাহানা সরাসরি হ্যাঁ না বললেও বাচনে ভঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয় সেও রাজী। স্বামীর স্বাদ পাওয়া শাহানা যেভাবেই হউক, শরীরের তৃপ্তির চেষ্টা করবেই, শরীরকে কষ্ট দিয়ে সে থাকতে পারবে না।

সুমন ও শাহানা যখন নিষিদ্ধ সম্পর্ককে পর্ণূতা দিতে প্রস্তুতি, সময় ও সুযোগ খোঁজে দুজনে মিলিত হবার, তখনই হুশ ফেরে শাহানার, ভুল পথে যাচ্ছে শাহানা, বিষয়টি বুঝতে পারে, বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে ইসলামের বিধান, শাস্তি এবং স্বামীর অধিকার অন্য কাউকে বিলিয়ে দেওয়ার, স্বামীর অবর্তমানে স্বামীর বিশ্বাসের অমর্যাদা করার বিষয়ে ভাবতে থাকে। নিশ্চিত ভুলের দিকে এগুতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেয় শাহানা। এমন পাপ কাজে সে কিছুতেই লিপ্ত হবে না। স্বামী তাকে অনেক ভালোবাসে, বিশ্বাস করে. সেও তার স্বামীকে ভালোবাসে, কিছুইে স্বামীর বিশ্বাস ও ভালোবাসার অমর্যাদা করবে না সে, যতই কষ্ট হউক নিজেকে সামলে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। শাহানা আরো ভাবতে থাকে, যাকে সাথে সারা জীবন সুখে দুঃখে ঘর সংসার করবে, শরীরের সুখের জন্য কিছুতেই নিষিদ্ধ সম্পর্কে জড়াতে পারে না শাহানা, এমন পাপ কাজে লিপ্ত হলে পরে স্বামীর সামনে মুখ দেখাতে পারবে না শাহানা। এসব ভেবেই নিজেকে স্থির করে।

ওদিকে সুমন শাহানার শরীর ভোগ করার সব বন্দোবস্ত করে ফেলে, দুজনে কোথায় মিলিত হবে তাও ঠিক করে ফেলে, শাহানাকে ফোন করে সুমন, শাহানা ফোন ধরে না, তবে বুঝতে পারে সুমন কিছু একটা করে ফেলার প্রস্তুতি নিয়েছে, এমনই কথা ছিল দুজনের। খারাপ কিছু হবার আগেই সতর্ক হয় শাহানা, শ্বশুড়কে ফোন করে, তাকে এসে নিয়ে যাওয়ার জন্য। শাহানার শ্বশুড়ও ছেলের বৌয়ের ফোন পেয়ে চলে আসে, বউ ও নাতনিকে নিয়ে নিজ বাড়ীতে যায়। শাহানাও সুমন দেওয়া নাম্বারটা বদলে ফেলে। ঘোরতর পাপ, অন্যায় করতে গিয়ে ফিরে আসতে পারায় তৃপ্তির ঢেকুর তুলে শাহানা।