যে একটি মাত্র কারণে সৌদি নাগরিকদের কাছে এত জনপ্রিয় সৌদি প্রিন্স সালমান
ভিল তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে ষোড়শ লুইয়ের উদাহরণ টেনেছেন। লুইয়ের তাড়াহুড়া করে সংস্কার আনতে যাওয়া ফরাসি বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করেছিল এবং এর ফলে ১৭৯৩ সালে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে মৃত্যুদণ্ড ভোগ করতে হয়েছিল। আরেকটি উদাহরণ হিসেবে ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে মিখাইল গর্বাচভের সংস্কারচেষ্টার কথা বলা যেতে পারে। তাঁর হুট করে বিরাট পরিবর্তন আনার চেষ্টার কারণে ১৯৯১ সালের শেষ নাগাদ সোভিয়েত ভেঙে পড়ে এবং তিনিও গদি হারান।
সম্প্রতি ঠিক একই ধরনের ঘটনা ঘটছে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমানের (ইতিমধ্যেই তিনি ‘এমবিএস’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন) ক্ষেত্রে। সৌদি আরবকে আধুনিক করার জন্য তিনি ব্যাপক সংস্কারের দিকে ঝুঁকেছেন। সৌদি বাদশাহরা তাঁদের বিশাল তেলসম্পদ ক্ষমতাধর প্রজাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে এবং সাধারণ জনগণের ওপর কট্টর ওয়াহাবি ধারার ইসলামি মতবাদ চাপিয়ে দিয়ে দীর্ঘদিন অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা তুলনামূলকভাবে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।
১৯৩২ সালে সৌদি রাজতন্ত্র পত্তনের পর সে দেশের বহু নাগরিক নজিরবিহীন বিলাসবহুল জীবনযাপনের সুযোগ পেয়েছেন। সৌদি রাজপরিবারের শত শত সদস্য মামুলি ‘মরুভূমির শেখ’ থেকে কোটি কোটি ডলারের মালিকানা থাকা আন্তর্জাতিক ধনিক সমাজের সদস্য হয়ে গেছেন।
সৌদি রাজত্বের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ ইবনে সৌদের উত্তরসূরিরা বংশপরম্পরায় রাজ্য শাসন করছেন। আরব ঐতিহ্য অনুসারে তাঁরা পূর্বসূরিদের নাম ধরে রেখেছেন। কখনো কোনো বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা হয়নি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি শাসকগোষ্ঠী তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনায় পড়ে গেছে।
আরব বসন্তে তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়া ও ইয়েমেনের কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন হয়েছে; সিরিয়ায় আসাদ পরিবার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মোহাম্মাদ বিন সালমান তাঁর দিক থেকে সতর্কবার্তা পেয়ে গেছেন। ২০১৭ সালে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি সৌদিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছেন।
সৌদি নারীদের গাড়ি চালাতে দেওয়া এবং ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা খর্ব করার মতো তাঁর বেশ কিছু পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সমর্থনসূচক প্রচারণা পেয়েছে। ওয়াহাবি মতবাদের নিপীড়নমূলক রীতিনীতি থেকে সৌদি রাজত্বকে মুক্তি দেওয়ার পথে এগুলো ইতিবাচক পদক্ষেপ। একইভাবে তাঁর খ্রিষ্টান, ইহুদি ও অন্য অমুসলিমদের প্রতি আরও বেশি সহিষ্ণুতা প্রদর্শনের আহ্বান এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করাকে ইতিবাচক হিসেবে নেওয়া হচ্ছে।
তবে এখনো তাঁর গৃহীত অন্য নতুন নীতি নিয়ে সমস্যা রয়ে গেছে। সৌদি অর্থনীতির তেলনির্ভরতা কমিয়ে আনার ব্যাপারে মোহাম্মাদ বিন সালমান যে পরিকল্পনা করেছেন, এখনো তার কাঠামো দাঁড় করানো যায়নি। কিন্তু ইতিমধ্যেই তিনি ‘দুর্নীতি দমন’ অভিযান শুরু করে দিয়েছেন। গত নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত অভিজাতদের মধ্য থেকে কয়েক শ লোককে তিনি গ্রেপ্তার করেছেন। গ্রেপ্তার হওয়া লোকদের মধ্যে কয়েকজন যুবরাজ এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক পরিচিত ব্যবসায়ীরাও আছেন। তেমন কোনো শক্ত অভিযোগ ছাড়াই তাঁদের আটক করা হয়।
টা প্রায় নিশ্চিত যে সৌদি আরবে আইনের মৌলিক নীতি অথবা আইনসিদ্ধ অধিকার চর্চার অভাব আছে। এ কারণেই হতাশায় থাকা অনেক সৌদি নাগরিক মোহাম্মাদ বিন সালমানের এসব পদক্ষেপকে সমর্থন জানাচ্ছে। তিনি আস্তে আস্তে তাঁর নির্বাহী ক্ষমতা প্রদর্শন করছেন এবং জনগণের কাছে শাসক হিসেবে তাঁর নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াচ্ছেন।
এর মধ্য দিয়ে এটি পরিষ্কার হয়েছে, বাবা বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের কাছ থেকে তাঁর কাছে ক্ষমতা ন্যস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি চরম কর্তৃত্ববাদী বাদশাহ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন। সৌদি রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্ষমতার ভাগাভাগির যে ঐতিহ্য আছে, তখন তা ভেঙে পড়বে। তখন অন্য যুবরাজদের ক্ষমতা খর্ব হয়ে যাবে।
মোহাম্মাদ বিন সালমানের চলমান সংস্কার কার্যক্রমের আন্তর্জাতিক প্রভাবও আছে। তিনি শুরুতেই ইরানের বিষয়ে কড়া অবস্থানে আছেন। আঞ্চলিক রাজনীতিতে ইরানের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। এটি শিয়া-সুন্নির বিভক্তি আরও বাড়িয়ে দেবে। ইরানের শাসকদের জার্মানির নাৎসি সরকারের সঙ্গে তুলনা করে তিনি যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, মিসর ও জর্ডানের মতো দেশ তা সমর্থন করছে।
একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু আঞ্চলিক সহাবস্থানের ক্ষেত্রে এগুলো ভালো কিছু বয়ে আনে না।
মোহাম্মাদ বিন সালমানের ইয়েমেনে সামরিক হস্তক্ষেপ ইতিমধ্যেই ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। ছোট কিন্তু ধনী দেশ কাতারের ওপর অবরোধ আরোপে উল্টো প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত বছরের শেষ দিকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে উৎখাত করার চেষ্টায়ও সফল হননি তিনি।
সৌদি আরব কোন পথে চলেছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। এটা ঠিক যে দেশটিতে একটি সমন্বিত সংস্কার দরকার। কিন্তু মোহাম্মাদ বিন সালমান ভুল না ঠিক পথে আছেন, তা এখনো বিশ্লেষকেরা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। যদি তিনি সফল হন, তাহলে তিনি মহান সংস্কারক হিসেবে বিশ্বের সামনে আসবেন। তবে এটি নিশ্চিত যে, বাদশাহ হওয়ার পর তিনি একনায়কত্বের পথেই হাঁটবেন। তিনি অভ্যন্তরীণ অভিজাত শ্রেণি এবং প্রতিবেশীদের খেপিয়ে তুললে দেশের মধ্যে তাঁর বিরোধিতা বাড়বে।
ইরানের সঙ্গে বৈরিতার কারণে পরিস্থিতি তাঁর নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সৌদি আরব প্রচুর অস্ত্র কিনলেও ইরানের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। এই দুই দেশে যদি শেষ পর্যন্ত সামরিক সংঘাত লেগে যায়, তাহলে তার আঁচ গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পার
ইংরেজি থেকে অনূদিত। স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেটশ্লোমো আভিনেরি ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও জেরুজালেমে হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক
সুত্র – প্রথম আলো
- চরম দু:সংবাদ: দেশ জুড়ে নেমে এলো শোকের কালো ছায়া মারা গেলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক
- আইপিএল নিলামে ঝড় তুলে বিশাল পারিশ্রমিকে দল পেলেন নাহিদ রানা
- আইপিএল নিলামে দল পেল মুস্তাফিজের দুই সতীর্থ, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়ের পথে বাংলাদেশ
- ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত চার দলের, বাদ পড়তে পারে ব্রাজিল, দেখেনিন আর্জেন্টিনার অবস্থান
- ব্রেকিং নিউজ: ১০ কোটি রুপিতে দল পেলেন নাহিদ রানা, দেখেনিন সাকিব ও মুস্তাফিজের অবস্থান
- এইমাত্র শেষ হলো বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা, দেখেনিন সর্বশেষ ফলাফল
- IPL নিলাম ২০২৫: মুস্তাফিজ বাদ ধোনির চাওয়াতেই রেকর্ড মুল্যে আইপিএলে দল পেলেন সাকিব
- ২০২৫ IPL নিলামে চমক দেখিয়ে রেকর্ড দামে দল পেলেন সাকিব
- ব্রেকিং নিউজ : IPL নিলাম: সাকিব মুস্তাফিজ নয় ইতিহাস গড়ে রেকর্ড বিডে যে দলে রিশাদ হোসেন
- চলছে IPL নিলাম, দেখেনিন সাকিব মুস্তাফিজের অবস্থান ও এখন পর্যন্ত দল পেলেন যারা
- 2025 IPL নিলাম: চেন্নাইয়ে সাকিব ও মুস্তাফিজ, কলকাতায় তাসকিন, দেখেনিন নাহিদ রানা যে দলে
- 2025 IPL নিলাম: আকাশ ছোয়া মূল্যে দল পেলেন লিটনের সতীর্থ, দেখেনিন সাকিব মুস্তাফিজের অবস্থান
- আইপিএল নিলামে ইতিহাস গড়ে ৪কোটি রুপিতে যে দলে মুস্তাফিজ
- মাত্র ৪৩ রানে অলআউট : বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ