ব্রাজিলের ৫ বিশ্বকাপের ৫ সোনালী ফুটবলার
এইসব ফুটবলারদের মেধার কথা এখনো স্মরণ করে ফুটবলবিশ্ব। ৫ বার বিশ্বকাপ জয়ী সাম্বা বালকদের দেশের সর্বকালের সেরা পাঁচ ফুটবলার সম্পর্কে গোনিউজ২৪ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হয়েছে কিছু তথ্য।
৫. সক্রেটিস :সক্রেটিস (১৯৭০-৮৬, আন্তর্জাতিক ম্যাচ ৬০টি, গোল ২২টি)সক্রেটিস একজন খেলোয়াড়, সংগঠক, রাজনীতিবীদ ও ডাক্তার। একজনের নামের পাশে এতসব টাইটেল দেখে চমকে গেলেও সক্রেটিস তার জীবনের ধাপে ধাপে এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তিনি ছিলেন ব্রাজিল দলের একজন অতৃপ্ত মহানায়ক। দীর্ঘদেহী এবং রুচিশীল এই মিডফিল্ডার ১৯৮২ সালে জিকো, ফ্যালকাও ও ইডরকে নিয়ে প্রতিপক্ষের জন্য মধ্যমাঠে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে জয় করতে পারেননি বিশ্বকাপের শিরোপা। তবে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন এবং দুইটি গোল করেন। ১৯৮৩ সালে দক্ষিণ আমেরিকার সেরা খেলোয়াড়ের খেতাবও লাভ করেন সক্রেটিস।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, আশির দশকে মাতৃভূমি ব্রাজিলকে স্বৈরশাসনমুক্ত করতে রাজপথে আন্দোলনেও নেমেছিলেন সক্রেটিস। ওই সময় ‘করিস্থিয়ান্স মুভমেন্ট’ নামে একটি সংগঠনও গড়ে তোলেন তিনি। মাঠে নামতেন ‘ডেমোক্রেসিয়া’ বা গণতন্ত্র লেখা জার্সি গায়ে। কিন্তু এসব খেয়াল সময়ের সঙ্গে ভেসে গেলেও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটাকে কখনোই দূরে যেতে দেননি তিনি। তাই ফুটবলের পাশাপাশি রাত জেগে চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। ১৯৭৪-১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সাও পাওলোর বিখ্যাত স্কুল ফেকুলদাদে ডি মেডিসিনা ডি রিবেরাও প্রেতোর ক্লাসে, লাইব্রেরিতে, ল্যাবরেটরিতে পড়ে থাকতেন ডাক্তারি বইপত্র নিয়ে। তার বিষয় ছিল স্পোর্টস মেডিসিন। শেষ পর্যন্ত ডিগ্রিটা পেয়েও গেলেন ফুটবল ইতিহাসের সেরা ১০০ ফুটলারের তালিকায় ঠাঁই পাওয়া এই তারকা।
৪. রোনালদিনহো :(১৯৯৯-বর্তমান, আন্তর্জাতিক ম্যাচ ৯৭টি, গোল ৩৩টি)একবার আর্জেন্টাইন তারকা লিও মেসিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, “বার্সার সর্বকালের সেরা কে?” তার জবাব ছিলো, “আমি নিজে বার্সার সর্বকালের সেরা নই, বার্সার সর্বকালের সেরা রোনালদিনহো। তিনি ক্লাবের ইতিহাসের পথই বদলে দিয়েছিলেন।
সেরা সময়ে ফুটবল ইতিহাসের খুব কম সংখ্যক খেলোয়াড় রয়েছে যারা রোনালদিনহোর সমকক্ষ দাবি করতে পারেন। তার কৌশল ও আলতো পায়ে বলের নিয়ন্ত্রণ দর্শকদের বিমোহিত করে। ২০০২ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের প্রধান নায়ক ছিলেন তিনি। চার বছর পর ফের দলকে ফাইনালে পৌঁছে দিলেও সফল সমাপ্তি ঘটাতে পারেননি।
ক্লাব পর্যায়ে বার্সেলোনায় খেলার সময় তিনি ছিলেন নিখুঁত এক বিশ্বসেরা ফুটবলার। পরপর তিনি ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব অর্জন করেন। ২০১৩ সালের কোপা লিবারটাডোরস ও নতুন করে রাইজিং সাউথ আমেরিকান ফুটবলার অব দ্য ইয়ার খেতাবে ভুষিত হয়েছেন। এক সময় তো আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার বলেই দিয়েছেন, “রোনালদিনহো কারো নাম নয়, এটা হলো ম্যাজিক আর শিল্প। সে বার্সাকে অনেক কিছু দিয়েছে, দিয়েছে সাফল্য আর বিশ্বাস।“
৩. রোমারিও :রোমারিও (১৯৮৭-.., আন্তর্জাতিক ম্যাচ ৭০টি, গোল ৫৫টি)রোমারিওকে বলা হতো ‘গোল এলাকার জিনিয়াস’। ব্রাজিলের এই ফুটবলার ছিলেন বেশ প্রতিভাবান, তবে খামখেয়ালি। কথায় আছে, পানি যেমন লোহাকেও মরিচা ধরাতে সাহায্য করে ঠিক তেমনই খামখেয়ালিপনা ধ্বংস করে দেয় প্রতভাকে। তিনি প্রতিভাবান ছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই, খুব পরিশ্রমী ছিলেন তা বলা যাবে না। অথচ আপনি যখন জানবেন, ক্যারিয়ার নিয়ে সিরিয়াস না হয়েও ফুটবল ইতিহাসে অফিশিয়ালি গোল সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন তিনি, তখন কিছুটা অবাক হলে আপনাকে দোষ দেয়া যাবে না। ইতিহাসের সেই উদাসীন মানুষটির নাম রোমারিও। খামখেয়ালি স্বভাবের কারণে যতটা পিছিয়েছেন, প্রতিভা দিয়ে সেটিকে পূরণ করে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ার নিয়ে সিরিয়াস হলে হয়তো আজ তিনি ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরা বলেই বিবেচিত হতেন। চলুন জেনে আসা যাক, কেমন ছিল এই দুর্দান্ত প্রতিভাধর ফুটবলারের খেলোয়াড়ি জীবন।
অদ্ভুত তথ্য হলো, ক্লাব পর্যায়ে রোমারিওকে এখনো সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি বার্সেলোনার হয়ে লা লিগা শিরোপা জয়ের পাশাপাশি পিএসবি এনডোভানের হয়ে তিনবার জয় করেছেন ইরাডিভাইস শিরোপা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি দুইবার কোপা দেল রে শিরোপা এবং ১৯৯৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। ব্যক্তিগতভাবে ১৯৯৪ সালে তিনি ফিফা বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় এবং ২০০০ সালে দক্ষিণ আমেরিকার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেন।
খুবই গরিব ঘরে জন্ম নেয়া এই ফুটবলার কিন্তু রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ২০১০ সালে ব্রাজিলের জাতীয় নির্বাচনে নিম্নকক্ষের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। বিরোধীদলীয় সাংসদ হিসেবে তিনি সফলও। বিশেষ করে বিশ্বকাপ আয়োজনের পেছনে মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় এবং বিশ্বকাপ প্রস্তুতির ধীরগতি নিয়ে সরকারের কড়া সমালোচক হিসেবে নাম কামিয়েছেন!
২. রোনালদো :রোনালদো (১৯৯৪-২০১১, আন্তর্জাতিক ম্যাচ ৯৮, গোল ৬২)ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়েই ইনজুরির সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন রোনালদো। তার পরও তিনি ক্যারিয়ারে তিনবার ফিফা বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের খেতাব অর্জন করেছেন। ‘দি ফেনোম্যান’ খেতাবের অধিকারী এই ব্রাজিলীয় ক্লাব পর্যায়ে বিদ্যুৎ গতির পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেছেন। যা তাকে পৌঁছে দিয়েছিল ব্রাজিলের ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ী স্কোয়াডে। চার বছর পর দলে তার অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তা অবধারীত হয়ে ওঠে। তবে ১৯৯৮ সালের আসরে তিনি দলের অলংকার হিসেবে কাটিয়েছেন। কারণ ফাইনালের আগের রাতে তিনি ইনজুরির কবলে পড়ে যান।
এছাড়া ২০০২ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ী দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন রোনালদো। চতুর্থ বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে তিনি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনটিও দখলে নেন তিনি। ১৫তম গোল করে তিনি টপকে যান গার্ড মুলারকে। শুধু তাই নয় ৬২ গোল করে ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থান লাভ করেন রোনালদো।
১. পেলে :পেলে (১৯৫৭-৭১, আন্তর্জাতিক ম্যাচ ৯২টি, গোল ৭৭টি)ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ফুটবলার বলা হয় পেলেকে। পেলে পরবর্তী যুগে তাকে ছাড়ানো সম্ভব এমন খেলোয়াড় এসেছিলেন মাত্র ৪ জন- দিয়েগো ম্যারাডোনা, রোনালদো লিমা, রোনালদিনহো আর লিওনেল মেসি। অনেকে জিনেদিন জিদান বা ইয়োহান ক্রুয়েফের নাম আনবেন। কিন্তু ক্যারিয়ারের কোনো পর্যায়েই এই দুজন সম্পর্কে বলা হয়নি যে, তারা পেলেকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন কিংবা ছাড়াতে পারবেন। এর কারণ হচ্ছে, পেলেকে ছাড়ানোর জন্য অনেক ছোট বয়স থেকে ভালো খেলাটা জরুরী এবং ক্যারিয়ার শেষেও ভালো ফর্ম বজায় রাখতে হবে। এই কাজটা সবচেয়ে ভালোভাবে শুরু করতে পেরেছিলেন ম্যারাডোনা, রোনালদো, রোনালদিনহো আর মেসিই।
যাই হোক, পেলে তার বর্ণিল ক্যারিয়ারে নিজেকে এমন এক রেকর্ডে পৌঁছে দিয়েছেন যেটি এখনো পর্যন্ত আর কেউ ভাঙ্গতে পারেনি। একই সঙ্গে তিনি ফুটবলকেও পৌঁছে দেন অনন্য এক উচ্চতায়। ফুটবল ক্যারিয়ারে তার ১২৮১ গোলের রেকর্ডটি ফিফার অফিসিয়াল রেকর্ডের শীর্ষস্থান দখল করে রয়েছে। আর তিনিই হলেন ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র খেলোয়াড় যিনি তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের মেডেল লাভ করেছেন। তন্মধ্যে দুইটি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ে প্রধান ভূমিকা রেখেছেন পেলে নিজে।
কৈশোর বয়সে বিশ্ব ফুটবল অঙ্গনে পা রাখা এই ফুটবলার ১৯৭০ সালে নিজেকে বসিয়ে দেন ফুটবলের রাজার আসনে। ক্লাব পর্যায়ে তিনি ৪০টির ও বেশি শিরোপা লাভ করেছেন। যার বেশিরভাগই এসেছে স্যান্টোস ক্লাবের হয়ে। তার অবস্থানের সময় ওই ক্লাবটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে মোহনীয় ক্লাব।
- চরম দু:সংবাদ: দেশ জুড়ে নেমে এলো শোকের কালো ছায়া মারা গেলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক
- আইপিএল নিলামে ঝড় তুলে বিশাল পারিশ্রমিকে দল পেলেন নাহিদ রানা
- ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়ের পথে বাংলাদেশ
- ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত চার দলের, বাদ পড়তে পারে ব্রাজিল, দেখেনিন আর্জেন্টিনার অবস্থান
- আইপিএল নিলামে দল পেল মুস্তাফিজের দুই সতীর্থ, দেখেনিন সাকিবের অবস্থান
- এইমাত্র শেষ হলো বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা, দেখেনিন সর্বশেষ ফলাফল
- IPL নিলাম ২০২৫: মুস্তাফিজ বাদ ধোনির চাওয়াতেই রেকর্ড মুল্যে আইপিএলে দল পেলেন সাকিব
- ব্রেকিং নিউজ : IPL নিলাম: সাকিব মুস্তাফিজ নয় ইতিহাস গড়ে রেকর্ড বিডে যে দলে রিশাদ হোসেন
- ২০২৫ IPL নিলামে চমক দেখিয়ে রেকর্ড দামে দল পেলেন সাকিব
- 2025 IPL নিলাম: চেন্নাইয়ে সাকিব ও মুস্তাফিজ, কলকাতায় তাসকিন, দেখেনিন নাহিদ রানা যে দলে
- আইপিএল নিলামে ইতিহাস গড়ে ৪কোটি রুপিতে যে দলে মুস্তাফিজ
- মাত্র ৪৩ রানে অলআউট : বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ
- টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- ব্রেকিং নিউজ : যে কারণে বাংলাদেশের ৮ ক্রিকেটারকে নি*ষি*দ্ধ করল বিসিবি
- চরম উত্তেজনায় ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে শেষ হলো ম্যাচ