মালয়েশিয়া প্রবাসী মইনুল ঠিকই দেশে গেল কিন্তু জানল না বিমানে উঠার সুখ
জহুর প্রদেশে এখানে সেখানে অবস্থান করানোর একপর্যায়ে এক কারখানায় কাজ মিলে। কিন্তু তার বাইরে যাওয়া বারণ কারণ পাসপোর্ট নেই, ভিসা নেই! শুরু হল বন্দীজীবন।দালাল টাকা নেয় কাজ দেয়ার জন্য মাসে মাসে। মাস শেষ হলেই বেতনের এক তৃতীয়াংশ নেয় দালাল। এরপর পাসপোর্ট ও পারমিট করে দেয়ার জন্য নেয় হাজার হাজার রিংগিত।
সবমিলে এত দেনা শোধ হয় বেতন থেকে মাসে মাসে। এরপর যা থাকে তাই দিয়ে চলে খাওয়া, থাকা।যতসামান্য কিছু অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে পাঠাতে পারে। প্রিয়জনের মুখগুলো যখন ভেসে উঠে তখন আনন্দে।ঝিলিক দেয় মন। এভাবে চলতে থাকে জীবন, শখ, আহ্লাদ, বঞ্চিত জীবন যেন কাজ করার আর অর্থ আয়ের মেশিন- আবেগ, অনুভূতি চলে না। মাঝে মাঝে মোবাইলে মিত্যা কথা বলতে হয় যে খুব ভাল আছে। পরিবারের কে কেমন আছে? জানেনা ছেলেটা মেয়েটা কত বড় হয়েছে? মেয়ের কি বিয়ে দিতে হবে? মানুষ ওদের কি বলে? মেঠো পথ, চির সবুজ গ্রাম, প্রতিবেশি, বন্ধু সব যেন এখন স্বপ্ন সান্তনা।
ইদানিং খুব স্বপ্নএ দেখা হয় প্রিয়জনদের।সাথে। মন আকুলি বিকুলি করে ওঠে। পাশের সহকর্মী বলেন, ‘ নে এবার বাড়ি যা, অনেক ত হল’। কিভাবে যাবে ভিসা নাই, অবৈধ। সেই দালালের নিকট যায় বলে, ‘দেশে।যাব। পাসপোর্ট যদি দিতেন’। আহা! যেন দেশে যাবার অধিকারটুকও নাই! প্রবাসে একমাত্র আইডি পাসপোর্ট তাও নিজের কাছেই রাখতে পারে না। দালাল বলে, তুই দেশে যাবি ক্যান? তোর ভিসা নাই। স্পেশ্যাল পাশ করাতে হবে। খরচ কত হবে জানিস?
আমি মুখ্যসুখ্য মানুষ অত বুঝি না। খরচ যা হয় দিব।আপনি ব্যবস্থা করেন। আর বেশি কিছু বলার সাহস হলো না যদি মারধর করে। এপর্যন্ত যত মারধর খেয়েছে তার গোষ্ঠীর সকলে মিলেও অত মাইর খায় নাই! হায়রে কপাল! মাঝেমধ্যে মন বিদ্রোহী হয়ে ওঠে কিন্তু কিছু করতে পারে না। যদি আরো বিপদ নেমে আসে! একদিন দালাল এসে বলে, দেড় লক্ষ টাকা লাগবে। কি পারবি?
জি, কিছুদিন সময় দেন, দেখি।শরীর ভাল যাচ্ছে না। এর মধ্যে শরীরের ডান পাশটা কেমন যেন করে! হাত দিয়ে ঠিকমত কাজ করা যায় না। এর মধ্যে একদিন বিছানা থেকে উঠতে গিয়ে পরে যায়। তাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তার বলে এক সাইট প্যারালাইজড।হাটতে পারবে না!
এতদু:খ এ জীবনে ছিল। হুহু করে কেঁদে উঠে। সবাই সান্ত্বনা দেয়। মন মানেনা। দালাল এসে বলে, ‘ তুই একা যেতে পারবি না। সাথে একজন লোক দিতে হবে তার খরচ দিতে পারবি? আবার খরচ! বুকের ভিতর খচ করে উঠে। চোখে অন্ধকার দেখে। তাহলে কি দেশে যেতে পারবে না! আর ভাবতে পারে না কাশি উঠে শরির গরম।
দেশে কথা বলে কিছু টাকা যোগার করে একজনকে ঠিক করা হল। হায়রে কপাল! যে একদিন টাকা পাঠাত তাকেই আজ দেশ থেকে টাকা আনতে হচ্ছে!দিনক্ষণ ঠিক হয়, খুশিতে মন নেচে ওঠে। শরীর কেমন চাঙ্গা চাঙ্গা লাগে। সবাই বলে, ‘কিরে তুই যে সুস্থ হয়ে গেলি!’ হ সেরকমই মনে হচ্ছে। দেশে যাবরে ভাই। আসছিলাম পানিতে ভেসে এবার যাব হাওয়াই ভেসে। ভাই বিমানে কেমনে কি করে?
জহুর থেকে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারে একজন সহযোগীসহ রেখে যায় দালাল।বলে ইমিগ্রেশনে জরুরী কাজ আছে। এইখানে চেক ইন করে তোরা চলে যাবি। আর কোন সমস্যা নাই।
মনেমনে অসন্তোষ থাকলেও রক্তচোষা জোকটাকে প্রথমবার মানবিক মনে হল। বলল, ‘বস, অনেক সময় ভাল আচরণ করিনি ক্ষমা করেন।’ ১১ ফেব্রুয়ারি মালিন্দ এয়ারের চেক ইন কাউন্টারে দুজন দাঁড়িয়ে আছে কোন রকমে।মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো, আলো ঝলমল এয়ারপোর্ট অন্ধকার নেমে এল। যখন আলো এলো নিজেকে দেখল একটা বেডে শুয়ে আছে। নড়ার শক্তি যেন শেষ! জানতে পারল। ডাক্তার তাকে দেখেছে, স্ট্রোক করেছে, মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। চলার শক্তি নাই। চিকিৎসা দরকার। এ অবস্থায় বিমানে ফ্লাই করতে হবে না; হাওয়াই ভাসা হল না! মনটা আরো খারাপ হল, তবে কি দেশে যেতে পারবে না! সাথের লোকটিও চলে গেছে। সে এখন একা!
বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন তার সাথে কথা বলল। কথা বলল তার মেয়ের জামাইয়ের সাথে।হাসপাতালে ভর্তি হবে কিন্তু খরচ দিবে কে? এমনিতেই অবৈধভাবে মালয়েশিয়া এসেছে এখনো বৈধ নয়।বৈধভাবে আসলে সরকারি সকল সুবিধা পায় কিন্তু সে পাবে না! তথাপি সারডাং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরমধ্য এগিয়ে আসেন কমিউনিটির একজন শ্রমিকদের জন্য কাজ করেন শাহ আলম তিনি।
হাসপাতালে কত লোক আসে তাকে দেখতে, হাইকমিশনের লোক আসে। ডাক্তার জানালো বিশ হাজারের বেশি রিংগিত লাগবে অপারেশন করতে কিন্তু তার শরীর অপারেশন করার উপযুক্ত নয়। অনুরোধ করা হল বিমানে চড়ে দেশে যাওয়ার উপযোগী করতে। এতে খরচ অর্ধেক হবে ডাক্তার বললেন, ‘দেখি আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব’। ক্রমশ দেখা দিল ফুসফুসে ইনফেকশন, জ্বর, শরীর অত্যাধিক দূর্বল, মুখে খেতে পারে না, শরীরের ডান পাশ অবশ, ডাকলে সাড়া নেই, নিজে শ্বাস নেবার জো নেই, মেশিন দিয়ে শ্বাস চালু রাখা হয়েছে- বুকটা অনেক উঠা নামা করে আর শব্দ হয়। সকল অনুভাব যেন নিস্তেজ।কানের কাছে মুখ নিয়ে ডাকলেও সাড়া নেই, চোখ দুটা খোলা কিন্তু অনুভূতি নেই চোখের পলক পরে না। নিস্তেজ চোখ। ডাক্তার বললেন, ‘ফ্লাই করার মত অবস্থা নেই। বিমানে নিলেই মারা।যাবে।
হ্যাঁ বিমানে হাওয়াই ভেসে মইনুল ঠিকই দেশে গেল কিন্তু জানল না হাওয়াই ভাসার।সুখ কেমন! জেনে গেল শুধু পানিতে ভাসার বেদনা। শুনল না বিমান বন্দরে প্রিয়জনের আহাজারি।
- IPL নিলাম : ২৬ নম্বর সেটে মুস্তাফিজ, ১ম সেটে রিশাভ পান্ত,দেখেনিন তাসকিন সাকিবের অবস্থান
- চরম দু:সংবাদ: দেশ জুড়ে নেমে এলো শোকের কালো ছায়া মারা গেলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক
- ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়ের পথে বাংলাদেশ
- আইপিএল নিলামে ঝড় তুলে বিশাল পারিশ্রমিকে দল পেলেন নাহিদ রানা
- ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত চার দলের, বাদ পড়তে পারে ব্রাজিল, দেখেনিন আর্জেন্টিনার অবস্থান
- এইমাত্র শেষ হলো বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা, দেখেনিন সর্বশেষ ফলাফল
- IPL নিলাম ২০২৫: মুস্তাফিজ বাদ ধোনির চাওয়াতেই রেকর্ড মুল্যে আইপিএলে দল পেলেন সাকিব
- ব্রেকিং নিউজ : IPL নিলাম: সাকিব মুস্তাফিজ নয় ইতিহাস গড়ে রেকর্ড বিডে যে দলে রিশাদ হোসেন
- ২০২৫ IPL নিলামে চমক দেখিয়ে রেকর্ড দামে দল পেলেন সাকিব
- 2025 IPL নিলাম: চেন্নাইয়ে সাকিব ও মুস্তাফিজ, কলকাতায় তাসকিন, দেখেনিন নাহিদ রানা যে দলে
- আইপিএল নিলামে ইতিহাস গড়ে ৪কোটি রুপিতে যে দলে মুস্তাফিজ
- মাত্র ৪৩ রানে অলআউট : বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ
- টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- ব্রেকিং নিউজ : যে কারণে বাংলাদেশের ৮ ক্রিকেটারকে নি*ষি*দ্ধ করল বিসিবি
- চরম উত্তেজনায় ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে শেষ হলো ম্যাচ