তামিম ইকবালের হৃদস্পন্দন ফিরিয়েছিলেন যিনি এর পরের ঘটনা জানলে চমকে যাবেন

তামিম ইকবালের হৃদস্পন্দন নেই। বিকেএসপির মাঠে হেলিকপ্টার আনা হলেও সেখান থেকে ঢাকায় আনা হলেও তামিমের শারীরিক অবস্থা তখন বেশ নাজুক। দ্রুততম অ্যাম্বুলেন্সে করে কেপিজি হাসপাতালে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। বিকেএসপির কোচ মন্টু দত্ত সেই সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘যদি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়, আমরা হয়ত তামিমকে আর ফিরে পাবো না।’
গুরুতর সেই সময়ে তামিম ইকবালের হৃদস্পন্দন বা হার্টবিট চালু করাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই কাজটা যিনি করেছিলেন তিনি বিকেএসপির ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম। তামিম ইকবালের হার্টবিট যখন একেবারেই নেই, তখন টানা সিপিআর দিয়েছিলেন বিকেএসপির সাবেক এই ছাত্র। নিজেই জানিয়েছেন সেই সময়ের কথা।
গতকালের কথা কোনো দিন ভোলা সম্ভব না উল্লেখ করেন ডালিম জানান, ‘পুরোটা সময় তামিম ভাইয়ের সাথে ছিলাম। মাঠ, অ্যাম্বুলেন্স থেকে হসপিটাল পর্যন্ত। অ্যাম্বুলেন্সে আমাদের সাথে দেবু-দাদা (দেব চৌধুরী) ছিলেন । দাদা অ্যাম্বুলেন্সে বসে আনুষাঙ্গিক সবার সাথে যোগাযোগ করছিলেন। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। অনেকটা ঘাবড়িয়ে গিয়েছিলাম! তামিমের অবস্থা উল্লেখ করে ডালিম লিখেছেন, ‘একটা পর্যায়ে মনে হয়েছে আপনাকে (তামিম ইকবাল) হারাতে বসেছি। কিন্তু মনটাকে শক্ত করে সমানে CPR Apply করে গিয়েছি। পুরো ডিটেইলসে বলার বা লিখার মতো অবস্থায় নাই। বার বার শুধু অ্যাম্বুলেন্সে পরে থাকা আপনার ঐ নিথর দেহটার কথা মনে পড়ছে। মনে হচ্ছে সবটায় স্বপ্নে ঘটে যাচ্ছে।’
বিকেএসপির এই ট্রেনারের ভাষ্য অনুযায়ী, টানা ২৫০ থেকে ৩০০ CPR Chest Compression করার পর তামিম ইকবালের হৃদস্পন্দন ফিরে আসে। এরপরেই তাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা পরবর্তী দায়িত্ব সম্পন্ন করেন।
সিপিআর কী? সিপিআর মূলত একটা জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন বা সংক্ষেপে 'সিপিআর'। কেউ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারালে, তার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে বা শ্বাস প্রশ্বাস চালু না থাকলে, সেই ব্যক্তিকে সিপিআর দিতে হয়।
রোগীকে কোনো সমতল স্থানে শুইয়ে এই সিপিআর দিতে হয়। রোগীর বুকের উপর দুটো হাত রাখতে হবে। এক হাতের উপর আরেক হাত রেখে দুই হাতের আঙুলগুলো ধরে হাতের তালু দিয়ে চাপ দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন চাপটি অন্তত দুই ইঞ্চি গভীরে যায়। প্রতিবার চাপ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে যাতে বুক আবার আগের অবস্থানে চলে আসে। এর গতি থাকবে মিনিটে ১০০ থেকে ১২০ বার।
ইয়াকুব চৌধুরী ডালিমের ভাষ্য অনুযায়ী, তামিম ইকবালকে অন্তত ২৫০ থেকে ৩০০ টি সিপিআর দিয়েছিলেন তিনি। তবে টানা ৩০ বার এরকম চাপ দেবার পর একটা বিরতি নিতে হবে। এরপরেই মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কোনো সাহায্য না আসা পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকে সিপিআর প্রক্রিয়া।
তামিমের চিকিৎসা কেমন ছিল? তামিম ইকবালের চিকিৎসায় হাসপাতালেও টানা ২২ মিনিট সিপিআর দেয়া হয়। হৃদস্পন্দন ফেরাতে ৩ বার দেয়া হয়েছিল ডি-সি শক। দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল-ক্লিনিক শাখা) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (তামিম ইকবাল) একিউট এমআই বা হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন, যার ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। প্রাথমিকভাবে প্রাইমারি পিসিআই করা হয় এবং এলসিএক্স নামের ধমনীতে ব্লক ধরা পড়ে। তাই জরুরিভিত্তিতে সেখানে স্টেন্ট (রিং) বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্লকেজ কমে গিয়ে হার্টে রক্তপ্রবাহ বাড়ে, যা তাকে দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করবে।
সাভারের কেপিজি বিশেষায়িত হাসপাতালের (পূর্বের ফজিলাতুননেসা মুজিব হাসপাতাল) ডিরেক্টর ড. রাজিব বলেন, ‘আমরা সবাই জানি তামিম ইকবাল ভাই আজ সকাল বেলা অসুস্থ হয়েছিলেন। ৯টা-সাড়ে ৯টার দিকে বিকেএসপিতে অসুস্থ হন। এখানে নিয়ে আসার পর চিকিৎসা শুরু হয়। পরবর্তীতে আমরা চিন্তা করি ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা। কিন্তু উনার অবস্থা গুরুতর হয়ে যায়, এই গুরুতর অবস্থায় আবার আমাদের কাছে আসেন। গুরুতর অবস্থা থেকে যত রকম চিকিৎসা দরকার সবই করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে উনার অবস্থা অনুকূলে আছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘উনার একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, এটার জন্য এনজিওগ্রাম করে এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্ট করা হয়েছে। স্টেন্টিং খুব স্মুথ ও কার্যকরভাবে হয়েছে। এটা করেছেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ। উনার ব্লকটা পুরোপুরি চলে গেছে এখন। এখনো উনি পর্যবেক্ষণে আছে, গুরুতর অবস্থা এখনো কাটেনি। এটা একটু সময় লাগবে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে তামিম ইকবালের সবশেষ অবস্থা জানার জন্য যোগাযোগ করা হয় ডিপিএলের সমন্বয়কারী সাব্বির আহমেদ রুবেলের সঙ্গে। ঢাকা পোস্টকে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে তামিমের অবস্থান। এদিকে মোহামেডান ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন ঢাকা পোস্টকে জানালেন, এখন পর্যন্ত ভালো আছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কিছু পরীক্ষা করানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে সন্ধ্যা বা রাতে বসুন্ধরায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে শিফট করানো হবে।
- সৌদি আরবে ঈদের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা
- সৌদিতে ঈদের চাঁদ দেখার প্রস্তুতি, ঘোষণা আসছে
- মালয়েশিয়ায় ঈদের তারিখ ঘোষণা
- বাংলাদেশে ঈদ কবে, জানালো মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম
- বাংলাদেশ দলে খেলে যত টাকা পেয়েছেন হামজা
- বাংলাদেশে ঈদ কবে, যা জানালেন জ্যোতির্বিদরা
- গত ২০ বছরে এমন দৃশ্য দেখেননি বাস শ্রমিকরা
- ৩ দেশে ঈদের তারিখ ঘোষণা
- ম্যাচ হেরে মুস্তাফিজকে মনে করিয়ে দিয়ে যা বললেন চেন্নাইয়ের হেড কোচ ফ্লেমিং
- সৌদি ও মালয়েশিয়াসহ ৫ দেশের ঈদের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা
- সৌদি আরবে ঈদের জামাতের সময় সূচি ঘোষণা
- বাড়ির ওপর বিমান বিধ্বস্ত, ধরে যায় আগুন, কেউ বেঁচে নেই
- স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ
- পিঠ ও কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ৫টি ঘরোয়া প্রতিকার
- ভেঙ্গে গেলো মেসির রেকর্ড