মাগুরায় ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য।

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রেসসচিব জানান, ‘চিকিৎসকরা প্রাণপণে চেষ্টা করছেন। আমরা সবাই প্রার্থনা করছি শিশুটি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।’

চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার শিশুটি দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে। প্রথমবার সকাল আটটার দিকে তার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। তড়িৎ চিকিৎসায় তার হৃদস্পন্দন পুনরায় সচল করা হয়। পরে আবারো তার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায় এবং একই পদ্ধতিতে সেটি পুনরায় সচল করা হয়। তবে শিশুটির মস্তিষ্ক এখনও প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থায় রয়েছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) মাত্র ৩, যা মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থাকে নির্দেশ করে। স্বাভাবিক অবস্থায় এই স্কেল হওয়া উচিত ১৫।

শিশুটির চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের প্রধান সার্জনের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও শিশুটির অবস্থা ক্রমাগত জটিল হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাগুরার আদালত তাদের মধ্যে বোনের শ্বশুরকে সাত দিনের রিমান্ড এবং বাকি তিনজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যায় তাকে সিএমএইচ-এর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

সারাদেশে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দ্রুত বিচার ও শিশুটির সুস্থতা কামনা করছে দেশবাসী।