চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের পর তোপের মুখে পড়েছেন সমন্বয়ক প্রান্ত বড়ুয়া। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রান্ত বড়ুয়ার কাছ থেকে হামলার দায় স্বীকার করিয়ে ক্ষমা চাইলে বিষয়টি মীমাংসা হয়। তবে, মীমাংসা বৈঠকের সময় গ্রুপের আরেক শিক্ষার্থী ফরহাদ পাটোয়ারি, যিনি বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী, সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিনহাজ হোসাইনের গায়ে হাত তোলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও অধ্যাপক মিনহাজ হোসেন দাবি করেছেন, এটি ছিল একটি ভুলবশত ঘটনা এবং উদ্দেশ্যমূলক ছিল না। তারপরও এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

এ ঘটনা সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারী গলি ক্যাম্পাসে ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রান্ত বড়ুয়া নামের এক সমন্বয়ক সিএসই বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীরকে ক্যাম্পাসের ফটকের সামনে মারধর করেন। শিক্ষার্থীরা তানভীরকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাসের ভিতরে নিয়ে এলে, প্রান্ত আবারও তার ওপর হামলা করার চেষ্টা করেন।

প্রান্ত বড়ুয়া আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। এই হামলার ঘটনা দ্রুত সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা আইন বিভাগ ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানায়। পুলিশের উপস্থিতিতে প্রান্ত বড়ুয়া হামলার জন্য ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

তবে, মীমাংসা বৈঠকের পর বিকেলে আবারও একটি নতুন অভিযোগ ওঠে। ফরহাদ পাটোয়ারি, যিনি জিইসি ক্যাম্পাসের বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী, সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিনহাজ হোসাইনের গায়ে হাত তোলেন। অধ্যাপক মিনহাজ হোসেন জানিয়েছেন, এটি ছিল একটি অনিচ্ছাকৃত ঘটনা এবং তিনি গায়ে হাত তোলাকে উদ্দেশ্যমূলক হিসেবে দেখছেন না। তিনি বলেন, "আমরা দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলাম, এর মধ্যে ভুলবশত আমার গায়ে হাত লেগেছে।"

এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রান্ত বড়ুয়া ফোনে জানান, তিনি ভীরের মধ্যে আছেন এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে, পরবর্তীতে তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, "এক শিক্ষার্থীকে মারধরের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শিক্ষকেরা বসে সমাধান করছেন এবং হামলাকারী শিক্ষার্থী ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেছেন।"

এই ঘটনার পর বিকেলের দিকে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মূল ক্যাম্পাসে জড়ো হতে শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গ্রুপে ধ্রুব দে নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, "আজকে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্ত বড়ুয়া তানভীর নামে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে এবং পরে ফরহাদ পাটোয়ারি আমাদের বিভাগের অধ্যাপক মিনহাজ হোসাইনের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। এটি মেনে নেওয়া যায় না।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু বিচার দাবিতে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।