বাংলাদেশে জুলাই ২০২৪-এ অভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এর পরপরই আওয়ামী লীগের বহু নেতা ও কর্মী নিরাপত্তার জন্য ভারতে পালিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে অনেক সাবেক মন্ত্রী, সিনিয়র নেতা, এবং জনপ্রতিনিধি বর্তমানে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

প্রভাবশালী নেতাদের অবস্থানসাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান: অক্টোবর মাসে তার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে তিনি দলবলসহ নিউটাউনের ইকো পার্কে ঘোরাফেরা করছেন। তার সঙ্গে ছিলেন এমপি অসীম কুমার উকিল, অপু উকিল এবং হাজি সেলিমের এক ছেলে। তবে বর্তমানে তিনি কোথায় অবস্থান করছেন, তা নিশ্চিত নয়।

ওবায়দুল কাদের: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শিলং হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং কলকাতায় আশ্রয় নেন।

সঞ্চিতা আবাসন ও অন্যান্য বিলাসবহুল আবাসনে অবস্থানকলকাতার রাজারহাট-নিউটাউন অঞ্চলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা থাকছেন। এই এলাকায় বিলাসবহুল আবাসনের ভেতরে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত কড়া।

জাহাঙ্গীর কবির নানক ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল: সিলেট আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সঞ্চিতা আবাসনে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তারা উপস্থিত ছিলেন।অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা: সিলেট স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবসার আজিজ, সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাশ মিঠু, এবং মাদারীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি নূর ই আলম চৌধুরী লিটনও কলকাতায় রয়েছেন।সতর্কতার মধ্যে জীবনযাপনআওয়ামী লীগের পালিয়ে আসা নেতারা অত্যন্ত সতর্কতার মধ্যে রয়েছেন। তারা মোবাইল ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করছেন এবং একে অপরের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত যোগাযোগ রাখছেন। কেউ হোটেলে না থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে অবস্থান করছেন।

স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকাস্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনীতিকরা এই নেতাদের ব্যাপারে কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করতে চান না। ফলে বিষয়টি আড়ালেই রয়েছে। তবে রাজারহাট-নিউটাউনে নতুন অতিথিদের প্রতি পুলিশ নজর রাখছে।

সীমান্ত অঞ্চলে আশ্রয়কলকাতার বাইরেও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা আত্মীয়স্বজনের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশে গ্রেপ্তার এড়াতে কয়েকজন চিকিৎসকও কলকাতায় অবস্থান করছেন।

বিশেষ ঘটনামে মাসে সঞ্চিতা আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার খুন হন, যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই এলাকায় অবস্থানের প্রমাণ করে।

বর্তমানে এসব নেতা-কর্মীর অবস্থান নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ঘাটতি থাকলেও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, কলকাতাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে তাদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে।