| ঢাকা, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

হাসপাতালের ১৫ কোটি টাকা চার কুমিরের পেটে

জাতীয় ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২৪ ডিসেম্বর ১৭ ০০:৫৬:৩১
হাসপাতালের ১৫ কোটি টাকা চার কুমিরের পেটে

সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে যেন আলাদীনের চেরাগ খুঁজে পেয়েছেন হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক আনিসুর রহমান, স্টোর কিপার সুলেমান ও হিসাবরক্ষক ছমিরুল ইসলাম। তারা গত অর্থ বছরে হাসপাতালের জিনিসপত্র ও ওষুধ কেনার নামে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি প্রায় কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই তিনজনের সঙ্গে আরও একজন আছেন তিনি হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন। এ চার কুমির হাসপাতালের ১৫ কোটি টাকার বেশি গ্রাস করেছেন বলে জানা গেছে। হাসপাতালের নতুন উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব অর্থ আত্মসাতের তথ্য সামনে আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১ মে সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগ দেন ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তারপরেই পুরোনো কায়দায় অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে হাসপাতালের স্টোর কিপার সুলেমান ও হিসাবরক্ষক ছমিরুল ইসলাম রুমে গিয়ে তার স্বাক্ষর নিতে চাইলে এসব অসঙ্গতিপূর্ণ বিল ভাউচার দেখে তিনি স্বাক্ষর দিতে রাজি হননি। পরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের নতুন উপ-পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক) ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানকে জামায়াত-শিবিরের লোক আখ্যা দিয়ে অন্যত্র বদলি করার জন্য তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামান্ত লাল সেন বরাবর ডিও দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন।

এ ছাড়াও অপরিচিত ফোন নম্বর থেকে নানাভাবে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

অটোমেশন যন্ত্র ক্রয় করা হয় ২০১৮ সালে। এই মেশিনের জন্য রাসায়নিক দ্রব্য ক্রয় দেখিয়ে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে চার কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বিল তোলা হয়। সদর হাসপাতালের ১৯টি কম্পিউটারের ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামত দেখিয়ে প্রায় ২৪ লাখ, অনুষ্ঠান, উৎসব, সভা-সেমিনারের ব্যয় ২৪ লাখ, আপ্যায়ন ২১ লাখ, পাপোস কেনায় ১৪ লাখ, সিল ও স্ট্যাম্প প্যাড কেনায় ১১ লাখ টাকার বিল তোলা হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে কেবল ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরেই আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ওই অর্থ বছরের অডিট প্রতিবেদন তাই বলছে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি এখন কথা বলতে চাই না।’ এ কথা বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের সাধারণ মানুষ যাতে ভয়ে কথা না বলতে পারে সে জন্য সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিনকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিসুর রহমান, হাসপাতালে স্টোর কিপার সুলেমান ও হিসাবরক্ষক ছমিরুল ইসলাম একটি চক্র তৈরি করেন। গত ২২-২৩ অর্থ বছরে হাসপাতালের নামে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে যেসব হরিলুট করা হয়েছে সেগুলো হলো: অটোমেশন যন্ত্র ক্রয় করা হয় ২০১৮ সালে। এই মেশিনের জন্য রাসায়নিক দ্রব্য ক্রয় দেখিয়ে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে চার কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বিল তোলা হয়।

সদর হাসপাতালের ১৯টি কম্পিউটারের ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামত দেখিয়ে প্রায় ২৪ লাখ, অনুষ্ঠান, উৎসব, সভা-সেমিনারের ব্যয় ২৪ লাখ, আপ্যায়ন ২১ লাখ, পাপোস কেনায় ১৪ লাখ, সিল ও স্ট্যাম্প প্যাড কেনায় ১১ লাখ টাকার বিল তোলা হয়েছে।

আমার সাথে উনার দেখাই হয় নাই। আমি উনাকে কিছুই বলিনি। উনি যদি থানায় অভিযোগ দিয়ে থাকেন তা হলে এগুলো মিথ্যা। উনার সাথে আমাদের কোনো হিসাব নেই। আমরা কোনো কাগজপত্র নিয়ে যাইনি উনার কাছে। উল্টো উনি ডায়ালাইসিসের মালামাল ক্রয় করে ঠিকাদারের টাকা আটকে রেখে দিয়েছেন।-স্টোর কিপার সুলেমান মিয়া

জেলা সদর হাসপাতালে কেবল ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরেই আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ওই অর্থ বছরের অডিট প্রতিবেদন তাই বলছে। কিন্তু হাসপাতালে কেনাকাটাসহ ৩২টি খাতে অর্থ ব্যয়ে ১৮ কোটি টাকার অডিট আপত্তি দিয়েছেন হাসপাতালের নতুন তত্ত্বাবধায়ক। সেইসঙ্গে এই অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে সরাসরি জড়িত হাসপাতালের স্টোর কিপার সুলেমান আহমদ, হিসাবরক্ষক মো. ছমিরুল ইসলাম ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক মো. আনিসুর রহমান (বর্তমানে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক), সেই সাথে তাদের পেছন থেকে ছায়া হিসেবে সহযোগিতা করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, এই প্রতিষ্ঠান মূলত স্টোর কিপার সুলেমান আহমদ ও হিসাবরক্ষক মো. ছমিরুল ইসলামের। তারা আড়ালে থেকে এই প্রতিষ্ঠানের নামে বিল নিতেন। শহরের মেসার্স জননী ক্লথ স্টোর, মেসার্স রায় ট্রেডার্স ও মেসার্স অনিক ট্রেডার্স নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ক্রয়ের নামে প্রায় ২০ লাখ টাকা বিল দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু পাপোসই আছে ১২ লাখ টাকার।

অভিযুক্ত হাসপাতালের স্টোর কিপার সুলেমান মিয়া বলেন, আমার সাথে উনার দেখাই হয় নাই। আমি উনাকে কিছুই বলিনি। উনি যদি থানায় অভিযোগ দিয়ে থাকেন তা হলে এগুলো মিথ্যা। উনার সাথে আমাদের কোনো হিসাব নেই। আমরা কোনো কাগজপত্র নিয়ে যাইনি উনার কাছে। উল্টো উনি ডায়ালাইসিসের মালামাল ক্রয় করে ঠিকাদারের টাকা আটকে রেখে দিয়েছেন।

অটোমেশন যন্ত্র ক্রয় করা হয় ২০১৮ সালে। এই মেশিনের জন্য রাসায়নিক দ্রব্য ক্রয় দেখিয়ে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে চার কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বিল তোলা হয়। সদর হাসপাতালের ১৯টি কম্পিউটারের ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামত দেখিয়ে প্রায় ২৪ লাখ, অনুষ্ঠান, উৎসব, সভা-সেমিনারের ব্যয় ২৪ লাখ, আপ্যায়ন ২১ লাখ, পাপোস কেনায় ১৪ লাখ, সিল ও স্ট্যাম্প প্যাড কেনায় ১১ লাখ টাকার বিল তোলা হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে কেবল ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরেই আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ওই অর্থ বছরের অডিট প্রতিবেদন তাই বলছে।

সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ও বর্তমানে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলেন, মূলত আমি সুনামগঞ্জের হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের ছিলাম। আমি থাকাকালীন অনেক কাজ হয়েছে হাসপাতালের। তবে নতুন তত্ত্বাবধায়ক আমার হিসাবে অডিট আপত্তি জানিয়েছেন। আমি তার লিখিত জবাব দেব। তবে যে সকল অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে উঠেছে এগুলো আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি গ্রুপ ইচ্ছে করে করছে।

সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, সুলেমান ও ছমিরুলই সুনামগঞ্জের এক আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম করেছেন। মূলত এরাই সব অনিয়ম-দুনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমাকেও তারা নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসন ও পুলিশকে সব অবহিত করেছি। নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছি।

এদিকে, সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের এ অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা।

ক্রিকেট

দিনের শুরুতেই দেখেনিন টিভিতে আজকের সকল খেলার সময়সূচি

দিনের শুরুতেই দেখেনিন টিভিতে আজকের সকল খেলার সময়সূচি

দেশি-বিদেশি ক্রীড়াঙ্গনের সূচিতে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ক্রিকেট অঙ্গনে রয়েছে ব্যস্ততা। এর মধ্যে অনূর্ধ্ব১৯ নারী এশিয়া ...

অবিশ্বাস্য রেকর্ড : বাংলাদেশ-১০৭, ওয়েস্ট ইন্ডিজ-১০৮

অবিশ্বাস্য রেকর্ড : বাংলাদেশ-১০৭, ওয়েস্ট ইন্ডিজ-১০৮

২০২৪ সালের শেষ প্রান্তে এসে ক্রিকেটবিশ্বের হিসাব-নিকাশে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ...

ফুটবল

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে নারী ফুটবল দলের হাত ধরে। ২০২২ সালের ...

অবাক ফুটবল বিশ্ব : মেসি ও রোনালদোকেও টপকে গেলেন ইয়ামাল

অবাক ফুটবল বিশ্ব : মেসি ও রোনালদোকেও টপকে গেলেন ইয়ামাল

২০২৪ সালে গ্লোবাল স্কেলে গুগলে সবচেয়ে বেশি সার্চ হওয়া ক্রীড়াবিদের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন স্প্যানিশ ...



রে