বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ও তাদের সমর্থকরা প্রকাশ্যে নিন্দা জানিয়েছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছে। এরই মধ্যে, ভারতের ক্রীড়াজগতে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং বর্তমানে ময়নার বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে ভারতে খেলতে আসার অনুমতি না দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তিনি বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড)-এর কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন, যদি বাংলাদেশ দল ভারতে খেলতে আসে, তবে তাদের আগে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

অশোক দিন্দা অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে কিছু মানুষের কার্যকলাপে ভারতের জাতীয় পতাকাকে অপমান করা হয়েছে, যা তার দেশপ্রেমে আঘাত দিয়েছে। তার মতে, যতদিন না বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া হবে, ততদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে ভারতীয় মাটিতে খেলতে আসার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।

দিন্দা তার আবেদনপত্রে আরও উল্লেখ করেছেন যে, যদি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ক্ষমা না চেয়ে ভারতে আসে, তবে স্টেডিয়ামে দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, যা মাঠের পরিবেশকে অশান্ত করে তুলবে। তিনি বলেছেন, “আমরা জনতার সঙ্গে মিশে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট টিমকে ঢুকতে দেব না। ভারতের জাতীয় পতাকার প্রতি যে কোনো অবমাননা মেনে নেওয়া যায় না।”

তিনি বিসিসিআইকে অনুরোধ করেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-কে একটি ইমেইল পাঠানোর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে যে, বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে ভারতে খেলতে আসার আগে অবশ্যই ভারতের জাতীয় পতাকাকে অপমানের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। এছাড়া, ম্যাচের আগে একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। মহমেডান স্পোর্টিংও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনে স্মারকলিপি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

এই সব ঘটনাবলি ভারতের ক্রীড়াজগতে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং দুই দেশের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে নিয়ে অশোক দিন্দার এই মন্তব্য শুধু ক্রীড়া ক্ষেত্রে নয়, বরং কূটনৈতিক পর্যায়েও উত্তাপ সৃষ্টি করতে পারে। জাতীয় পতাকার প্রতি অবমাননার অভিযোগে ক্ষমা চাওয়ার দাবি কতটা কার্যকর হবে বা এর প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটি স্পষ্ট যে, এই ইস্যুতে ক্রিকেট এবং কূটনীতি একসঙ্গে নতুন মাত্রা পেয়েছে।