| ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

সামনে এলো আসল সত্য : সরকার পতনের মাস্টার মাইন্ড কে এই জোলানি

জাতীয় ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২৪ ডিসেম্বর ০৮ ১৫:২৪:২৮
সামনে এলো আসল সত্য : সরকার পতনের মাস্টার মাইন্ড কে এই জোলানি

দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। সংগঠনটির প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি রোববার (৮ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা দেন।

এইচটিএসের ঘোষণাসংগঠনটির প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, “জালিম শাসক বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন। সিরিয়া এখন মুক্ত। এর মধ্য দিয়ে একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হলো এবং সূচনা হলো একটি নতুন যুগের।”

বাশার আল-আসাদের টানা দুই যুগের শাসনের অবসান ও তার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সিরিয়া এবং আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে।

জোলানির উত্থান ও পরিচয়আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির নাম এখন আন্তর্জাতিক মহলে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। তার অতীত ও বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, বিশেষ করে কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা, বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

আল-জোলানির আসল নাম আহমেদ হুসাইন আল-শারা।

জন্ম: ১৯৮২ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে।তার বাবা ছিলেন একজন পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী।১৯৮৯ সালে তার পরিবার সৌদি আরব থেকে সিরিয়ায় ফিরে আসে এবং দামেস্কের অদূরে বসতি স্থাপন করে।সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিএইচটিএসের এই অভূতপূর্ব সাফল্যের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ায় একটি নতুন রাজনৈতিক পর্বের সূচনা হয়েছে। বাশার আল-আসাদের বিদায়ের পর আল-জোলানি নেতৃত্বাধীন এইচটিএস কীভাবে দেশ পরিচালনা করবে এবং আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া কী হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

নতুন পরিস্থিতি সিরিয়ার ভবিষ্যৎ রাজনীতি, নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দামেস্কে থাকাকালে জোলানি কী করতেন, তা জানা যায় না। ২০০৩ সালে সিরিয়া থেকে ইরাকে এসে তিনি আল-কায়েদায় যোগ দেন। এই বছরই ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সেখানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন। তখন থেকে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৬ সালে জোলানি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হন। পাঁচ বছর আটক থাকেন।

গণতন্ত্রের দাবিতে ২০১১ সালে সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে বাশার আল-আসাদ সহিংসতার পথ বেছে নেন। এর জেরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।

২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় জোলানি ছাড়া পান। এরপর তার নেতৃত্বে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে, বিশেষত ইদলিবে শক্তিশালী হতে থাকে।

প্রথম দিকের কয়েক বছর জোলানি আবু বকর আল-বাগদাদির সঙ্গে কাজ করেন। বাগদাদি ছিলেন ইরাকের ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান। এই সশস্ত্র গোষ্ঠী পরে আইএসআইএল (আইএসআইএস) নাম ধারণ করে।

২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে বাগদাদি আকস্মিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন। সিরিয়ায় নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেন। একটা পর্যায়ে আইএসআইএল আল-নুসরা ফ্রন্টকে বেশ ভালোভাবে নিজেদের সঙ্গে একীভূত করে ফেলে। তখনই আইএসআইএলের জন্ম হয়।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘সবচেয়ে কার্যকর’ ভূমিকা পালন করেছে এইচটিএস ও এর প্রধান জোলানি।

জোলানি এ পরিবর্তন প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। এ অবস্থায় ২০১৪ সালে আল-জাজিরাকে প্রথমবারের মতো টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দেন জোলানি। এতে তিনি বলেছিলেন, তার গোষ্ঠী ‘ইসলামিক আইনের’ যে ব্যাখ্যা দেবে, সিরিয়া সেই অনুযায়ী শাসিত হবে।

তবে কয়েক বছর পর জোলানির মধ্যে পরিবর্তন আসে। তিনি আল-কায়েদার মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোয় ‘বিশ্বব্যাপী খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার প্রকল্প থেকে সরে আসেন। এমন কিছুর পরিবর্তে সিরিয়া সীমান্তের ভেতরে নিজের গোষ্ঠীর তৎপরতা সীমাবদ্ধ করেন জোলানি।

জোলানির এ পরিবর্তনকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তারা মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে জোলানির গোষ্ঠীটি বহুজাতিক বা আন্তদেশীয় গোষ্ঠীর বদলে একটি জাতীয় গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয়।

২০১৬ সালের জুলাইয়ে বাশার সরকার আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ইদলিবের দিকে চলে যায়। সিরিয়ার এ অঞ্চল তখনো বিদ্রোহীদের দখলে।

২০১৬ সালে জোলানি প্রকাশ্যে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি আল-নুসরা বিলুপ্ত করেন। গঠন করেন নতুন সংগঠন জাভাত ফাতেহ আল-শাম।

২০১৭ সালের শুরুর দিকে আলেপ্পো থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা ইদলিবে পালিয়ে আসেন। এ সময়ে বিদ্রোহীদের ছোট ছোট অনেক গোষ্ঠী ও নিজের জাভাত ফাতেহ আল-শাম নিয়ে এইচটিএস গঠন করেন জোলানি।

এইচটিএসের ঘোষিত লক্ষ্যই ছিল বাশার আল-আসাদের স্বৈরাচারী শাসন থেকে সিরিয়াকে মুক্ত করা। এইচটিএস আজ এই লক্ষ্য অর্জনের ঘোষণা দিল।

এইচটিএসের অন্য লক্ষ্যের মধ্যে আছে—সিরিয়ায় ‘ইরানের সব সশস্ত্র গোষ্ঠীকে বিতাড়িত করা’। নিজেদের দেওয়া ‘ইসলামি আইনের’ ব্যাখ্যা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘সবচেয়ে কার্যকর’ ভূমিকা পালন করেছে এইচটিএস ও এর প্রধান জোলানি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

সাকিব কি বিপিএল খেলতে দেশে আসছেন ! অবিশ্বাস্য মন্তব্য করলেন সুজন

সাকিব কি বিপিএল খেলতে দেশে আসছেন ! অবিশ্বাস্য মন্তব্য করলেন সুজন

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানের মাঠে ফেরার বিষয়টি দিন দিন আরও অনিশ্চিত ...

ভারতের সাথে তিস্তার পানি নিয়ে সমাধান নিয়ে সুখবর দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ভারতের সাথে তিস্তার পানি নিয়ে সমাধান নিয়ে সুখবর দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য তিস্তা নদীর পানির সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শুষ্ক মৌসুমে পানির ...

ফুটবল

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে নারী ফুটবল দলের হাত ধরে। ২০২২ সালের ...

মক্কায় স্ত্রীসহ মেসির হজের ছবি ভাইরাল, জানা আসল ঘটনা

মক্কায় স্ত্রীসহ মেসির হজের ছবি ভাইরাল, জানা আসল ঘটনা

সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি ও তাঁর স্ত্রীকে মক্কায় হজ করতে দেখা যাচ্ছে ...



রে