সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি)কে চিঠি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এই চিঠি পাঠানো হয় ৯ নভেম্বর, এবং বিষয়টি ১২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাসহ গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধসহ অন্যান্য গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির ব্যবস্থা নিতে আইজিপির কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এটি এমন একটি সময়ে এল যখন ১০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পুরোনো ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘গণহত্যার অভিযুক্ত পলাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।’’

এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বিষয়েও কিছু মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আইসিসিতে দায়ের করা অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটি কোনো মামলা নয়, এটা শুধুমাত্র একটি পিটিশন, যা পৃথিবীর যেকোনো ব্যক্তি আইসিসিতে জমা দিতে পারেন।’’ তিনি অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বস্তুনিষ্ঠহীন বলে উল্লেখ করেন এবং আরও বলেন, ‘‘এই ধরনের মামলার কোনো আইনি ভিত্তি নেই এবং এটি একধরনের প্রচারণা, যা বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।’’

ড. আসিফ নজরুল অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ এই মামলা ব্যবহার করছে শুধুমাত্র নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য এবং সরকারকে বিশ্বজনমত ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে খলনায়ক হিসেবে উপস্থাপন করতে চাচ্ছে।

এখন, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শককে চিঠি দেওয়ার পর, সরকার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পদক্ষেপের দিকে সকলের নজর রয়েছে। বিষয়টি আইনগতভাবে কিভাবে এগোবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এর কী প্রভাব পড়বে, তা এখন দেখার বিষয়।

এটি বাংলাদেশের রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।