গিনির জাতীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থার (এএনআইএফ) পরিচালক বালতাসার ইবাং এনগোঙ্গার ঘরোয়া যৌন কেলেঙ্কারির ভিডিও সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা দেশটির প্রশাসনে এক জোরালো বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। প্রায় ৪০০টিরও বেশি যৌন ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি ২০ জনেরও বেশি মন্ত্রীদের স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করছেন। এসব ভিডিও প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছড়ালেও পরবর্তীতে তা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটকের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রকাশ পায়।

বিবিসি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, এনগোঙ্গার বিরুদ্ধে এমন চরম ধরনের অভিযোগ উঠে আসার পর গিনি সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এসব ভিডিওতে এনগোঙ্গার সঙ্গে শুধুমাত্র মন্ত্রীদের স্ত্রীদের নয়, প্রেসিডেন্টের আত্মীয়, পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তার স্ত্রী এবং ভ্রাতৃবধূকেও দেখা গেছে। এনগোঙ্গা বর্তমানে তদন্তের মুখোমুখি, এবং তাকে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এসব ভিডিও মূলত সরকারি অফিস, রাষ্ট্রীয় বিশ্রামাগার এবং হোটেলগুলোর বিভিন্ন স্থানে ধারণ করা হয়েছিল। গিনি প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন এবং দ্রুত একাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট তেওডোরো এনগুয়েমা ওবিয়াং মাঙ্গু এক্স (পূর্ববর্তী টুইটার) প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে জানান, "ঘটনার সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যেককে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হবে, কারণ এটা তাদের আচরণবিধির পরিপন্থী এবং জনগণের নৈতিকতার আইনকে সরাসরি লঙ্ঘন করেছে।"

গিনির জাতীয় আর্থিক দুর্নীতি দমন সংস্থা (এএনআইএফ) একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থা, যা আর্থিক জালিয়াতি, দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তদন্ত করে থাকে। এনগোঙ্গার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আসায় দেশটির সরকারের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে যে, হয়তো এসব যৌন কেলেঙ্কারি তদন্ত কার্যক্রমের মধ্যে এক ধরনের চক্রান্তের অংশ হতে পারে।

এনগোঙ্গার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর সরকারের পক্ষ থেকে সব ভিডিও অপসারণের চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তা সফল হয়নি। সারা দেশে বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ এবং আলোচনা চলছে, এবং এটি গিনির রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।