| ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

ফাঁস হলো বিপিএলের গোঁপণ তথ্য : ২ বছরে ৩০টির বেশি দু*র্নীতি ও ফি*ক্সিং হয়েছে

খেলাধুলা ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২৪ নভেম্বর ০১ ১৬:৪৬:৫৬
ফাঁস হলো বিপিএলের গোঁপণ তথ্য : ২ বছরে ৩০টির বেশি দু*র্নীতি ও ফি*ক্সিং হয়েছে

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের বিস্তার বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটকে আরো জনপ্রিয় করে তুললেও দুর্নীতি ও ফিক্সিংয়ের ঝুঁকিও একইসঙ্গে বেড়েছে। টি-টোয়েন্টি, টি-টেনসহ বিভিন্ন ফরম্যাটের টুর্নামেন্ট বিশ্বব্যাপী আয়োজিত হওয়ায় আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই ধরনের লিগে দুর্নীতি প্রতিরোধে আইসিসির নীতিমালা সবসময় কার্যকর হয় না, এবং কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আইসিসির নির্দেশিকা কঠোরভাবে মানা হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দেশের একমাত্র বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতে দুর্নীতির অভিযোগের হার বেড়েছে। *দ্য টেলিগ্রাফ*-এর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত দুই বছরে বিপিএলে ৩০টিরও বেশি দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুর্নীতির প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত অনেক খেলোয়াড়ের জন্য খেলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকায় এই পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। আইসিসির সাবেক দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের প্রধান স্টিভ রিচার্ডসনও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

আইসিসি এবং সংশ্লিষ্ট বোর্ডগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর উপর আরও নজরদারি বাড়ানো এবং নীতিমালার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে না পারলে এই ঝুঁকি ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

*দ্য টেলিগ্রাফ* প্রকাশিত “কীভাবে ক্রিকেট নিজেকেই খেয়েছে” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপিএলসহ বেশ কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ এবং লিজেন্ডস লিগে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিপিএলের আয়োজকরা দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আইসিসির সহায়তা না নিয়ে নিজেদের মতো করে কম খরচে সেই কাজ করে, যা বিপিএলে স্বচ্ছতার অভাব তৈরি করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘সর্বশেষ দুই বছরের বিপিএলে ৩০টির বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু একজনও নিষিদ্ধ হয়নি। প্রায়ই দুর্নীর্তির অভিযুক্তরা প্রমাণ হওয়ার আগপর্যন্ত বছরের পর বছর খেলায়ও থেকে যান।’

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি টেলিগ্রাফকে জানিয়েছেন অনেক ক্রিকেটারই এসব ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে চাইলেও তারা নিরাপত্তারহীনতার কারণে তারা সেসব জানাতে ভয় পান। শুধু সরাসরি কাউকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়া হলেই সেই খবর জানান কতৃপক্ষকে। অনেক সময় সন্দেহ থাকলেও কেউ মুখ খুলেন না।

এমনটা জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অভিযোগ জানাতে অনেক খেলোয়াড়ই ভয় পান। প্রথম কারণ, তাঁদের পারিশ্রমিক না–ও দেওয়া হতে পারে, দ্বিতীয় কারণ তাঁরা নিজেদের অনিরাপদ বোধ করতে পারেন। তাঁরা তখনই জানান, যখন সরাসরি অ্যাপ্রোচ করা হয়। কিন্তু শুধু সন্দেহের ওপর খুব কমই বলেন।’ এই ব্যক্তির নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

রিচার্ডসন জানিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো নিজেদের মতো করে যে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে তাতে অনেক ঝুঁকিও আছে। তারা শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আইসিসির এই কর্মকর্তা। আইসিসি সাহায্য ছাড়া শুধু একজন দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তা মাঠে থাকলেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত রাখা যায় কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আইসিসির এই কর্মকর্তা।

রিচার্ডসন টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ‘যখন ছোট ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিজস্ব ইভেন্ট কাভার করে, তখন ঝুঁকি হচ্ছে, এর মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বিধান কি ততটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে? আইসিসি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ও তথ্যের জন্য যোগাযোগ না করে একজন দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তা মাঠে থাকলেই লিগকে সর্বোত্তমভাবে রক্ষা করা যায় না। এর মধ্যে অনেক কিছুই আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সব সময়ই দুর্নীতিবাজরা তৎপর হওয়ার চেষ্টা করেন। এর অর্থ এই নয় যে সব লীগে দুর্নীতিবাজরা কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ভালো উদ্দেশ্যের মানুষ, যাঁরা হয়তো বুঝতেই পারছেন না যে তাঁরা কী করছেন।’

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়; বরং টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর থেকেই ফিক্সিংয়ের ঘটনা সামনে এসেছে। বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট (আকসু) ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স এবং চিটাগং কিংসের ম্যাচসহ ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের আরও দুটি ম্যাচে ফিক্সিংয়ের সন্দেহজনক কার্যকলাপের প্রমাণ পায়। খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলস ও বরিশাল বার্নাসের মধ্যকার ম্যাচেও ফিক্সিংয়ের বিষয়টি উঠে আসে।

২০১৯ সালের বিপিএলে আফগানিস্তানের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান শফিকুল্লাহ ম্যাচ পাতানোর চেষ্টায় ৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন; তিনি সিলেট থান্ডারের হয়ে খেলছিলেন। এর আগে, ২০১৬ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ফিক্সিংয়ের প্রচেষ্টার দায়ে পাকিস্তানের নাসির জামশেদও জড়িত ছিলেন। তিনি ম্যাচ পাতানোর জন্য জুয়াড়িদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন এবং তার হয়ে ছয়জন ক্রিকেটার এই কাজে অংশ নেন।

বিপিএলের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিয়মিতভাবেই দুর্নীতি ও ফিক্সিংয়ের ঝুঁকি থাকে। দুর্নীতি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এটি পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না, যা বিপিএলের স্বচ্ছতা ও সুনামের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

BPL : সবাইকে তাক লাগিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় চার তারকা বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে ভেড়ালো দুর্বার রাজশাহী

BPL : সবাইকে তাক লাগিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় চার তারকা বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে ভেড়ালো দুর্বার রাজশাহী

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ২০২৫ আসরের ঠিক এক সপ্তাহ আগে বড় চমক দিল দুর্বার রাজশাহী। ...

ফাইনাল ম্যাচ সহ টিভিতে আজকের সকল খেলার সময়

ফাইনাল ম্যাচ সহ টিভিতে আজকের সকল খেলার সময়

এনসিএল টি-টোয়েন্টি আজ জাতীয় লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির ফাইনালে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) মুখোমুখি হচ্ছে রংপুর ও ঢাকা ...

ফুটবল

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে নারী ফুটবল দলের হাত ধরে। ২০২২ সালের ...

মক্কায় স্ত্রীসহ মেসির হজের ছবি ভাইরাল, জানা আসল ঘটনা

মক্কায় স্ত্রীসহ মেসির হজের ছবি ভাইরাল, জানা আসল ঘটনা

সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি ও তাঁর স্ত্রীকে মক্কায় হজ করতে দেখা যাচ্ছে ...



রে