| ঢাকা, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

বাংলাদেশের হয়ে কি আর খেলতে পারবেন সাকিব,জানা গেলো আসল সত্য

খেলাধুলা ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২৪ অক্টোবর ৩১ ২৩:০৪:৫৭
বাংলাদেশের হয়ে কি আর খেলতে পারবেন সাকিব,জানা গেলো আসল সত্য

সাকিব আল হাসানের টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষাংশে যে অস্পষ্টতার মেঘ জমা হয়েছে, তা তাঁর ভক্ত এবং ক্রিকেটবিশ্বের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টেস্টে না খেলার সিদ্ধান্ত এবং পূর্বে কানপুরে খেলানো টেস্টকে শেষ টেস্ট হিসেবে উল্লেখ করায় সাকিবের বিদায়ী সময়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

### সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তিসাকিব আল হাসান নিজেই বলেছেন, যদি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট খেলতে না পারেন, তাহলে কানপুর টেস্টই হবে তাঁর শেষ। এখন প্রশ্ন উঠছে, সাকিব কি সত্যিই শেষ টেস্ট খেলার আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে ফেলেছেন? নিরাপত্তার কারণে সরকারী পরামর্শে তিনি দেশে আসেননি, ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

### বিসিবির ভূমিকাবাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যদি সাকিবকে আর প্রয়োজন মনে না করে, তাহলে হয়তো তাঁর শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচও হয়ে গেছে। সাকিব নিজেই জানান, তিনি এই সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন। অর্থাৎ, তাঁর দিক থেকে এ ধরনের প্রত্যাবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই।

### ওয়ানডে ভবিষ্যৎএখন সাকিবের পরিকল্পনা রয়েছে শুধুমাত্র ওয়ানডে খেলার। তিনি আগামী ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মাধ্যমে ওয়ানডেকে বিদায় জানাতে চান। কিন্তু এই ইচ্ছা পূরণ হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা কতটা?

### প্রশ্নের মুখোমুখিদক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে তাঁর শেষ টেস্ট খেলার আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়ায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কি আসলেই দুর্বল? একজন ক্রিকেটার যিনি দেশে খেলার সুযোগ না পেয়ে বিদেশে খেলছেন, সেই অবস্থায় তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের পরবর্তী অধ্যায় কেমন হবে—এটাই এখন বড় প্রশ্ন।

এই পরিস্থিতিতে সাকিবের নিরবতা এবং বিসিবির অবস্থান ভক্তদের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। সাকিব যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিতে চান, তাহলে তাঁর ক্যারিয়ারের এই অধ্যায় শেষ হতে চলেছে, যা সবার জন্যই দুঃখজনক।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলতি দুই টেস্টের সিরিজের দ্বিতীয়টি শুরু হবে ২৯ অক্টোবর, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এই টেস্ট শেষেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ওয়ানডের সিরিজ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবে বাংলাদেশ দল। শারজায় ৬, ৯ ও ১১ নভেম্বর ম্যাচ তিনটি খেলে সেখান থেকেই পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে দল উড়াল দেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্দেশে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তিন টেস্ট আর তিন টি–টোয়েন্টির সঙ্গে বাংলাদেশ ওয়ানডেও খেলবে তিনটি। এরপর দেশে ফিরে কয়েক দিনের বিশ্রামের পর শুরু হয়ে যাবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতি।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে যদি সাকিব তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ করতে চান, তাহলে আগের দুটি সিরিজেও তাঁর খেলা উচিত; বলা ভালো তাঁকে খেলতে দেওয়া উচিত। সাকিবের খেলার মধ্যে থাকার জন্য যেমন সেটি দরকার, তাঁর ফর্ম আর ফিটনেস দেখার জন্যও তা জরুরি। শুধু আনুষ্ঠানিক অবসরের সুযোগ দেওয়ার জন্যই তো আর কোনো ক্রিকেটারকে আইসিসির ইভেন্টের মতো বড় টুর্নামেন্টে দলে রাখা যায় না। দলে কার্যকর ভূমিকা রাখার মতো অবস্থায় থাকতে হবে তাঁকে।

মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলতে দেশে আসতে না পেরে দুবাই থেকে সাকিব ফিরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। আপাতত সেখানে সময় কাটছে পরিবারের সঙ্গে। এদিকে আফগানিস্তান সিরিজের আর বেশি দিন নেই। দল থেকে এতটা দূরে থেকে সাকিব কীভাবে প্রস্তুত হবেন এই সিরিজের জন্য? নির্বাচকেরাই বা কীভাবে জানবেন সাকিব সিরিজটা খেলার জন্য সব দিক থেকে প্রস্তুত কি না।

অবশ্য সাকিবকে নিয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণেই বিসিবির সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা ছাড়া নির্বাচক কমিটির পক্ষে তাঁর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। যত দূর জানা গেছে, বিসিবি এ ব্যাপারে নির্বাচকদের এখনো কিছু জানায়নি। বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ বর্তমানে দেশের বাইরে। আগামীকাল তাঁর দেশে ফেরার পরই হয়তো এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু হবে ।

অবশ্য বিষয়টা এমনই স্পর্শকাতর, এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা বেশ জটিলই। দেশে যেহেতু সাকিব বিরোধিতা আছে, বাংলাদেশের হয়ে তাঁর বিদেশে প্রতিনিধিত্ব করা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। ধরুন সব বিবেচনা করে বিসিবি সাকিবকে আফগানিস্তান সিরিজের ওয়ানডে দলে রাখল না। তাদের মনে হলো, অবসর নিলে তো আর কিছুদিন পর এমনিতেই তাঁকে ছাড়া খেলতে হবে। তাহলে এই কয়টা ম্যাচের জন্য খামাখা ঝামেলায় জড়ানো কেন!

তখন প্রশ্ন জাগবে, তাহলে বিসিবিই কি বাধ্যতামূলক অবসরের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারকে? টি–টোয়েন্টি আর খেলবেন না, টেস্ট ক্যারিয়ারও একরকম শেষ। এখন ওয়ানডে দলেও জায়গা না হলে ধরে নিতে হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই সাকিবের বিদায় ঘটে গেল অনানুষ্ঠানিকভাবে। এরপর থেকে সাকিবের খেলা দেখতে হবে শুধু বিভিন্ন দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই।

এ রকম বিদায়কে ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে’ বলতে হচ্ছে কারণ, সাকিব নিজে বলেননি তিনি আর ওয়ানডে খেলবেন না। গা থেকে রঙিন জার্সিটা খুলে রাখতে তিনি তাকিয়ে আছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দিকে। সে ইচ্ছা যদি পূরণ না হয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁর মতো তারকা ক্রিকেটারের বিদায়টা হয়ে থাকবে বিতর্কিত, ভবিষ্যতের জন্য যা ভালো উদাহরণ হয়ে থাকবে না।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ঘোষণা দিয়ে অবসর নেওয়ার রেওয়াজ তেমন নেই। কখনো ক্রিকেটাররা নিজ থেকেই ঘোষণাটা দেন না। কখনো বিসিবিই সে রকম পরিস্থিতি রাখে না। সাকিব ঘোষণা দিয়েছিলেন। পেছনের কারণ যেটাই থাকুক, তাঁকে সেই মঞ্চটা দিতে না পারার দায় নিতে হবে বর্তমান বোর্ডকেই।

আসলে সাকিব ‘সাকিব’ বলেই বিষয়টাকে এত সরলভাবে ভাবার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ইতিহাসের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকবেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁর যদি একটা সুন্দর বিদায় না হয়, সে ইতিহাসটাই যে রয়ে যাবে অসম্পূর্ণ!

আবার যদি ফারুক আহমেদের বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়, সাকিবকে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অন্তত যথাযথভাবে বিদায় দেওয়া হবে; চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়েই শেষ হবে সাকিবের ক্যারিয়ার; সেখানেও কি বাধা কম!

যে ক্রিকেটার ১৭ বছরের ক্যারিয়ার শেষে নিজের শেষ ম্যাচটি খেলার জন্য দেশে আসতে চেয়েও পারেননি, যাঁকে সরকারি পর্যায় থেকেও নিজ দেশে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া যায়নি, সেই ক্রিকেটারকেই দেশের বাইরে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দিলে সেটা অনেকটা স্ববিরোধী অবস্থানই হয়ে যায়।

সাকিবের দেশে আসার বিরোধিতা করে ‘হোম অব ক্রিকেটে’র বাইরে আন্দোলন হয়েছে। তাঁকে গালাগাল করে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দেয়ালে চিকা মারা হয়েছে। দেশের বাইরে তাঁকেই আবার জাতীয় দলে আশা করাটা একটু কি স্বার্থপরের মতো চিন্তাও হয়ে যায় বোধহয়।

এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারই বা দেশের হয়ে কতটা নিবেদন দিয়ে খেলতে পারবেন, সে প্রশ্নও থাকে। যদি পারেনও, তাঁর ক্রিকেটীয় ব্যর্থতা তখন আর ক্রিকেটীয় দৃষ্টিতে না–ও দেখা হতে পারে। যৌক্তিক খারাপ পারফরম্যান্সেরও নানা রকম অর্থ দাঁড়াতে পারে তখন।

সব মিলিয়ে বিসিবির জন্য এটা শাঁখের করাতের মতো অবস্থা। ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান প্রধান ফারুক আহমেদ একজন সাবেক ক্রিকেটার ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কও। বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটাররা খেলাটার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট এমন অভিভাবক আগে পায়নি। তাঁর কাছে তাই আশাটাও বড়। তিনিই যদি ব্যর্থ হন সাকিবের মতো একজনকে মাঠ থেকে বিদায় দিতে, সেই দুঃখ কোথায় রাখবেন এ দেশের ক্রিকেটাররা!

ক্রিকেট

ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া :খেলতে খেলতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ক্রিকেটারের মৃ-ত্যু

ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া :খেলতে খেলতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ক্রিকেটারের মৃ-ত্যু

ভারতের পুনেতে ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ এএস ট্রফিতে হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের অরঙ্গাবাদের গারওয়ার ...

টিভিতে আজকের খেলা

টিভিতে আজকের খেলা

বড়দিন উপলক্ষে আজ কোনো খেলার ইভেন্ট নেই। তবে বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির চতুর্থ টেস্ট নিয়ে অনুষ্ঠান গেম ...

ফুটবল

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

পাল্টে গেলো ফুটবল বিশ্বের সকল অতীত : নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করল ফিফা

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে নারী ফুটবল দলের হাত ধরে। ২০২২ সালের ...

মক্কায় স্ত্রীসহ মেসির হজের ছবি ভাইরাল, জানা আসল ঘটনা

মক্কায় স্ত্রীসহ মেসির হজের ছবি ভাইরাল, জানা আসল ঘটনা

সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি ও তাঁর স্ত্রীকে মক্কায় হজ করতে দেখা যাচ্ছে ...



রে