শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতিবাদে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। তার সব খবর দিয়েছেন তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ লড়বে। ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন।

"আমার মা কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি," তিনি বলেছিলেন। সে সময় পায়নি। তিনি একটি বিবৃতি দিয়ে পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এরপর সময় না থাকায় আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এমনকি আমার মায়েরও গোছানোর সময় ছিল না। সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

জয় বলেন, প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ না করায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হতে পারে। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। এই সরকারের মেয়াদ এখনো ঠিক হয়নি। তবে আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন দেখতে চান জয়। যেখানে আওয়ামী লীগও অংশগ্রহণ করবে।

রয়টার্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। তবে তার মা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানোর কোনো নির্দেশ দেননি। জয় আরো বলেন, দেশে ফিরে শেখ হাসিনা যেকোনো বিচারের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, আমার মা এর আগে কখনও গ্রেফতারের হুমকিতে ভয় পাননি। শুধুমাত্র তার সরকারের লোকেরা বেআইনি কিছু করেছে, তার মানে এই নয় যে তারা আমার মায়ের নির্দেশে এটা করেছে। এর মানে এই নয় যে এই সবের জন্য আমার মা দায়ী। এর জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমার মা প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ব্যবহার করার জন্য কাউকে আদেশ দেননি। পুলিশ সহিংসতা থামানোর চেষ্টা করলেও কিছু পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতিশোধমূলক বক্তব্যকেও স্বাগত জানিয়েছেন জয়। তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে বলে আমার পূর্ণ আস্থা আছে। অন্যথায় আমরা বিরোধী দল থাকব। যেভাবেই হোক ভালো হবে। মিসেস খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুনে খুশি হলাম। আসুন অতীত ভুলে যাই। প্রতিহিংসার রাজনীতি করা উচিত নয়। ঐক্য সরকার থাকুক বা না থাকুক, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমি বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য বিএনপির সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সহ একটি শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই তাদের সাথে কাজ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতিতে সংলাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিতর্ক করতে পারি, অসম্মতিতে সম্মত হতে পারি এবং সর্বদা আপস খুঁজে পেতে পারি।

আওয়ামী লীগ চাইলে জয় আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হওয়ার কথা বিবেচনা করবে, 'আমার মা এই মেয়াদ শেষে রাজনীতি থেকে অবসর নিতেন। দল যদি আমাকে চায়, আমি অবশ্যই বিবেচনা করব।