শেষ মুহূর্তে চলছে ব্যাপক পরিবর্তন, নতুন বাংলাদেশ নিয়ে অবিশ্বাস্য মন্তব্য করলেন সজীব ওয়াজেদ জয়
ছাত্র-জনতার প্রচন্ড উত্তপের পর অবশেষে কঠিন আন্দোলনের মুখে পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেও এ বিষয়ে দু'দিন আগে অর্থাৎ শনিবার তিনি প্রথমবারের মতো চিন্তাভাবনা করেছিলেন। তবে দেশ ছাড়ার ব্যাপারে কোন প্রস্তুতিই ছিল না শেখ হাসিনার। এমনটাই জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যে সরকার উৎখাতে (ছাত্র-জনতার আন্দোলনে) রূপ নেবে হবে, তা তারা কেউ ধারণা পর্যন্ত করতে পারেননি।
সহিংস ছাত্র জনতা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের দিকে মিছিল নিয়ে পৌঁছাতে যতটা সময় লাগবে, দেশত্যাগের জন্য শেখ হাসিনার হাতে সেটুকু সময় বেঁধে দিয়েছিল সেনাবাহিনী। এমন তথ্যের বিরোধিতা করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমার মা এবং খালার দেশছাড়ার জন্য নির্দিষ্ট করে কোন সময় বেঁধে দেয়া হয়নি।
জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম বিবিসির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সম্পাদক ইথিরাজন আনবারাসনকে দেয়া একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার পদত্যাগের শেষ মুহূর্তের পরিস্থিতি, নতুন বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে তার মতামত এবং কোটা আন্দোলন থেকে সরকার পতন পর্যন্ত নানা বিষয়ে কথা বলেছেন শেখ হাসিনার ছেলে জয়।
ঠিক কবে, কখন, পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শেখ হাসিনা, সোমবার সকালে নাকি রোববার সন্ধ্যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে সজিব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, সোম কিংবা রোববার না, তারও আগে পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এটা শনিবার হতে পারে। তবে দেশছাড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার মা কখনো বাংলাদেশ ছাড়তে চাননি। তাকে আমাদের রাজি করাতে হয়েছে। তিনি পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করছিলেন, তিনি একটা ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন এবং সংবিধান মেনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন।'
'কিন্তু বিক্ষুব্ধ লোকজন গণভবনের দিকে মিছিল করার কথা ঘোষণা করলো, আমরা পরিবারের সদস্যরা তার কাছে অনুনয় করি যে, তারা সহিংসতার জন্য আসছে, তারা হত্যা করতে পারে, তোমাকে নিরাপত্তার জন্য চলে যেতে হবে। আমার খালা (শেখ রেহানা) তার সঙ্গে ছিলেন। আমার মা চাইছিলেন তার ছোট বোন যেন হেলিকপ্টারে করে সামরিক বিমানঘাঁটিতে চলে যান। কিন্তু আমরা মা উঠতে চাচ্ছিলেন না। তখন আমি তাকে এবং আমার খালাকে বলি, তাকে (শেখ হাসিনা) অবশ্যই যেতে হবে।' তিনি জানান, হেলিকপ্টারে করে ঢাকা ছাড়েন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে আগরতলা ও পরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন।
উত্তাল আন্দোলনের উত্তাপ অনুধাবনে শেখ হাসিনার সরকার ভুল করেছিল কিনা, জানতে চাওয়া হলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, পরিস্থিতি যে সরকার উৎখাতের দিকে গড়াবে তা তারা কেউ ভাবতেও পারেননি। জয় বলেন, 'দলের কেউ ভাবেনি এই সহিংস আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকার উৎখাতের দিকে গড়াবে। আমরা বুঝতে পারছিলাম, জুলাইয়ের ১৫ তারিখে যে সহিংসতার পেছনে কিছু অজানা গ্রুপ আছে, তারা মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করার সময় আমরা রাজাকার বলে শ্লোগান দিয়েছিল। তখন আমাদের সমর্থকদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কঠোরভাবে সেই সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করে।'
আমার বিশ্বাস, সেদিন যারা ওই শ্লোগান দিয়েছিল, আমরা এখনো জানি না মধ্যরাতে সেই স্লোগান দেয়া ব্যক্তিরা কারা ছিল, তারাই এই পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য দায়ী।
'আওয়ামী লীগ সরকার কখনো বিক্ষোভকারীদের ওপরে শক্তি প্রয়োগ করতে চায়নি, বরং পুলিশ তাদের পাহারা দিয়েছে, তাদের ওপর হামলার কোন নির্দেশ ছিলো না, দাবি করেন জয়।
মাত্র একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে যে সমস্যার সমাধান করা যেতো, তা কেন এত প্রাণহানিতে গড়ালো, বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘এর আগে তো আমাদের সরকারই কোটা বাতিল করে দিয়েছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরে হাইকোর্ট সেটা বহাল করে। আমাদের সরকারের আইনি টিমও আদালতে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের চেষ্টা করছিল। এটা এর মধ্যেই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই সহিংসতা শুরু হয়। বলপ্রয়োগ ভুল হয়েছে, কিন্তু এটা উভয় পক্ষেই হয়েছে। শিক্ষার্থী মারা গেছে, বেসামরিক মানুষ মারা গেছে, পুলিশও মারা গেছে।’
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কোন পথেশেখ হাসিনার রাজনীতি থেকে ইস্তফা দেয়ার পর এখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে আসবে জানতে চাইলে জয় বলেন, 'দেশের ঐতিহ্যবাহী দলটি এবারও টিকে যাবে। ১৯৭৫ সালের পরে যখন বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা কারাগারে ছিল, তখনো দল টিকে গেছে। এটি হচ্ছে আদর্শভিত্তিক দল, দেশের একমাত্র গণতান্ত্রিক দল যা স্বাধীনতার পূর্বে গণতান্ত্রিকভাবে গঠিত হয়। বাকি দুটি দল সামরিক শাসকদের হাতে তৈরি। দল নিজেই তাদের নেতা এবং নতুন নেতৃত্ব খুঁজে বের করে নেবে। কিন্তু এখন তারা আমাদের দল ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে, তারা আমাদের মন্ত্রীদের খুঁজছে, অনেকে লুকিয়ে আছে, অনেকে বিদেশে চলে গেছেন।'
দেশে ফিরে সজীব ওয়াজেদের নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছা আছে কিনা, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'সত্যি কথা বলতে, এরকম কোন ইচ্ছা নেই। এটা আমাদের পরিবারের জন্য তৃতীয় ধাক্কা। যেমন মানুষ, তেমন নেতাই তাদের পাওয়া উচিত। এখন বাংলাদেশে মব রুল (গণ সহিংসতা) চলছে।'
সামনে যে নির্বাচন হবে, হয়তো আওয়ামী লীগকে অংশ নিতে দেয়া হবে না। হয়তো বিএনপি-জামাত জোট নির্বাচনে জয়ী হবে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আসলে অন্ধকারাচ্ছন্ন।''
অনেকে অভিযোগ করছেন, আওয়ামী লীগের সময়েও অনেক দমন পীড়ন হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে। এমনকি দুইজনকে সম্প্রতি আট বছর গুম থাকার পরে দুজনকে মুক্তিও দেয়া হয়েছে। এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'অবশ্যই কিছু ভুল হয়েছে। সরকারের মধ্যে অনেক ব্যক্তি ছিলেন যারা এসব ভুল করেছেন। কিন্তু আমরা সব সময়েই সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সরকারেই একজন মন্ত্রীর জামাতা, বিশেষ বাহিনীর সদস্য ছিলেন কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য কারাগারে গেছেন (নারায়ণগঞ্জের সাত খুন)। এমনটাও ঘটেছে। আমার মা সব সময়েই ঠিক কাজটা করার চেষ্টা করেছেন।’
অন্তর্বর্তী সরকারে অংশ নেবে কী আওয়ামী লীগবাংলাদেশের মাটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যগুলো যেভাবে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জয় বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অসন্তোষ এবং তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এটাই আমার এখনকার অনুভূতি। আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় দল, এখনো আমাদের জনসমর্থন সবচেয়ে বেশি। ১৭ কোটি মানুষের দেশে ১০/২০ হাজার খুব ক্ষুদ্র অংশ। আপনি জানেন, গণতান্ত্রিক একটি দেশে কোন দল শতভাগ সমর্থন লাভ করতে পারে না। আমি মনে করি, আওয়ামী লীগ এখনো জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল।'
কিন্তু আমি যখন এসব (ভাঙচুরের) ছবি দেখি, আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি গভীর অসন্তোষ অনুভব করি। এখন যা বাংলাদেশে ঘটছে, তা পাকিস্তানি শাসনামলের মতো। একসময় বাংলাদেশের মানুষ পেছন ফিরে তাকিয়ে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের সময়কে স্বর্ণযুগ বলে মনে করবে। সেই দিন তারা আফসোস করবে, কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক হয়ে গেছে।’
আওয়ামী লীগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশ হবে কিনা, জানতে চাওয়া হলে জয় বলেন, 'তারা আওয়ামী লীগকে কখনোই অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ হতে দেবে না। বাংলাদেশের মানুষের আচরণে কষ্ট পেয়েছেন শেখ হাসিনা।’
শেখ হাসিনার সঙ্গে সর্বশেষ কখন কথা হয়েছে জানতে চাওয়া হলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, 'তার সঙ্গে আমি মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) কথা বলেছি। তিনি সুস্থ আছেন, তবে অনেক কষ্ট পেয়েছেন। আমাদের দলের এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক মানুষের প্রাণহানি হওয়ায় তিনি ব্যথিত। বাংলাদেশের মানুষের আচরণে তিনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন।’
‘আমি বিদেশে বড় হয়েছি এবং পরিবারসহ সেখানেই বাস করি। বাংলাদেশের ডিজিটাইলাইজেশনের জন্য আমি বিনা পয়সায় উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছি। আমি সফল হয়েছি, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে আমি ডিজিটাল কানেক্টিভটি নিয়ে গেছি। সেই বাংলাদেশের মানুষ আমার মায়ের সঙ্গে এরকম করেছে, আমার নানাকে অসম্মান করেছে যিনি এই দেশের প্রতিষ্ঠাতা, এটা মেনে নেয়া আমার জন্য অনেক কঠিন। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আমি আর কোন ঘনিষ্ঠতা রাখতে চাই না।’
সেই সময় ঢাকায় অবস্থানরত শেখ হাসিনার সঙ্গে সংক্ষেপে জয়ের কয়েকবার কথা হয়। তখন অনেক হৈচৈ হচ্ছিল। তখন সংক্ষেপে শেখ হাসিনার সাথে তার শেষ যে কথাটি হয়েছে, তা হলো, 'মা, তোমাকে এখনি দেশ ছাড়তে হবে।’ তার বোনের সঙ্গেও মায়ের কথা হয় বলে জানান জয়। তার বোন সায়মা ওয়াজেদ জাতিসংঘের একটি দপ্তরের কর্মকর্তা হিসেবে ভারতে থাকেন।
- রণ*ক্ষেত্রে পরিনত : ভয়া*বহ সং*ঘর্ষ, আ*হ*ত ৪০,সেনাবাহিনীর........
- ব্রেকিং নিউজ : ঢাকার অবস্থা ভ*য়া*ব*হ খারাপ
- ব্রেকিং নিউজ: হেলিকপ্টার দু*র্ঘ*ট*না*য় মা*রা গেলেন যে দেশের সেনা প্রধান
- ব্রেকিং নিউজ : দুটি বাসের ভ*য়াবহ দু*র্ঘ*ট*না,৫২ জনের মৃ*ত্যু,দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়......
- চরম দু:সংবাদ : বাংলাদেশেই নি*হ*ত ৪৯৭ জন, আ*হ*ত ৭৪৭
- ব্যাপক উ*ত্তেজ*না : শত শত সে*নাসহ জে*নারেল আ*টক
- পরিস্থিতি থ*ম*থ*মে : ব্যাপক সং*ঘ*র্ষ, ভা*ঙ*চু*র ও লু*টপা*ট, ৩৫ বাড়িতে আ*গুন, র্যা*ব মোতায়ন
- বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন দু;সংবাদ : সৌম্য সরকার নেই
- হাসিনা নয় : সামনে এলো আসল তথ্য, যার নির্দেশে সাঈদীকে পরিকল্পিতভাবে হ*ত্যা করা হয়েছিল
- আজ ১৯/১২/২৪ তারিখ, দেখেনিন আজকের সৌদি রিয়াল রেট
- এইমাত্র পাওয়া : নি*হত ৮৫৮ জন, আ*হত ১১ হাজার ৫৫১ জন
- আইপিএল থেকে এলো মুস্তাফিজের জন্য অবাক হওয়ার মতো খবর
- ব্রেকিং নিউজ : ভয়া*বহ হা*ম*লা
- এইমাত্র পাওয়া: সারা দেশে শোকের কালো ছায়া, মারা গেলেন উপদেষ্টা......
- ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করা বাংলাদেশ IPL দল না পাওয়ার কারন জানালেন ক্রিস গেইল